সিলেট ব্যুরো:
শারদীয় দুর্গোৎসব চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘মিথ্যাচার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে সিলেটে ‘ধিক্কার মিছিল’ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সংগঠনটি।
শুক্রবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর কোর্ট পয়েন্ট এলাকা থেকে মিছিলটি বের হয়ে সুরমা পয়েন্ট হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দেয় বিক্ষোভকারীরা। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে সংগঠনটি।
এবার দুর্গাপূজায় সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার পর ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। নানুয়ার দিঘির পাড়ের ওই মণ্ডপসহ নগরীর বেশ কিছু মণ্ডপে ভাঙচুর চলে। পরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়। এ নিয়ে দেশজুড়ে যখন প্রতিবাদ চলে, তখন বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা নিয়ে কিছু অতি উৎসাহী গণমাধ্যম বানোয়াট গল্প রটাচ্ছে। নোয়াখালীতে হামলার ঘটনায় যে দু’জন হিন্দু মারা গেছেন, তাদের একজনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে এবং অন্যজন পানিতে ডুবে মারা গেছেন। কিছু অতি উৎসাহী গণমাধ্যম ও ব্যক্তিরা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মৃত্যু নিয়ে গল্প ছড়াচ্ছে।’
বক্তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তিনি বর্তমান অসাম্প্রদায়িক সরকারের মন্ত্রী পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। সকল সাম্প্রদায়িক সহিংসতার দ্রুত বিচার ও শান্তি দাবি করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধে কঠোর হওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি শারদীয় দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজামণ্ডপ, মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা, হত্যাকাণ্ড ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এসব নারকীয় তাণ্ডব নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন মিথ্যাচার করেছেন। এতে করে সাম্প্রদায়িক হামলাকারীকে উস্কে দিচ্ছেন সরকারের দায়িত্বশীল এই মন্ত্রী। এবারের শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে যে রক্তক্ষরণ হয়েছে তাতে তিনি অসত্য, অনভিপ্রেত ও মিথ্যাচারমূলক বক্তব্য দিয়ে আরও আঘাত করেছেন।
মিছিল সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ, ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদ, ছাত্র ঐক্য পরিষদ, বিভিন্ন উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্বশীল নেতৃবৃন্দ, প্রগতিশীল রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ প্রগতিশীল চিন্তা চেতনার সাধারণ মানুষ।
ইউএইচ/
Leave a reply