‘নির্বাচন পরিচালনায় ব্যর্থতার দায় রয়েছে বর্তমান কমিশনের’

|

নির্বাচন পরিচালনায় বর্তমান কমিশনের দায় দেখছেন বিজ্ঞজনেরা।

নির্বাচন পরিচালনায় ব্যর্থতার দায় রয়েছে বর্তমান কমিশনের। আরও জোরালো ভূমিকা পালন করা দরকার ছিল নির্বাচন কমিশনের। সাবেক সার্চ কমিটির এক সদস্য ও প্রস্তাবকারী দলের অভিন্ন মন্তব্য এমনটাই। কোনো আর্থিক দুর্নীতি হয়ে থাকলে তা বিচারের আওতায় আনারও পরামর্শ দেন তারা। তবে গ্রহণযোগ্য ভোটের জন্য অন্যান্য দল ও ভোটারদেরও ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন তারা। নতুন কমিশন গঠনের আগে আইন করা দরকার বলে মনে করেন সাবেক সার্চ কমিটি ও আইনজ্ঞরা।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে গঠন করা হয়েছিল সার্চ কমিটি। ঘটা করে মতামত নেয়া হয় রাজনীতিবিদ, সাবেক কমিশনারসহ বিভিন্ন মহলের। কমিশনারদের নাম প্রস্তাব দেয় নিবন্ধিত ২৫ রাজনৈতিক দল। তবে কমিশন গঠনে আওয়ামী লীগ, বিএনপির চেয়ে প্রাধান্য পায় আওয়ামী জোটে থাকা বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের প্রস্তাব। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাসহ দুই জনই আসেন তরিকত ফেডারেশনের তালিকা থেকে।

এরপর প্রায় পাঁচ বছর পার করলো কমিশন। কেমন ছিল কমিশনের পথচলা, এ নিয়ে কথা বলেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ আলী ফারুকী। তিনি বলেন, কিছু মারামারি, সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এসব কখনোই কাম্য নয়। কে এম নুরুল হুদা কমিশনের দায় অবশ্যই আছে। যেহেতু তিনি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, নির্বাচনের সময় তার অধীনেই প্রশাসন চলে। সে হিসেবে অবশ্যই তার দায়-দায়িত্ব আছে। হয়তো যথাযথভাবে সে দায়িত্ব তিনি প্রয়োগ করতে পারেননি।

নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটিতে ছিলেন তখনকার প্রধান হিসাব নিরীক্ষক মাসুদ আহমেদ। তিনি বলেন, প্রশ্নবিদ্ধ ভোটের দায় সকলের। ভোটার বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সকলের উৎসবমুখর অংশগ্রহণ দরকার। যদিও দায় এড়াতে পারে না কমিশন।

সার্চ কমিটির সাবেক সদস্য মাসুদ আহমেদ নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যাপারে আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন কীভাবে গঠিত হবে সে সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করে সেই আইনের মধ্যে রাখতে হবে, যোগ্যতা হিসেবে কী থাকবে।

এবারই প্রথমবারের মতো কোনো নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ওঠে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ। এ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন বিশিষ্টজনেরা। সার্চ কমিটির সাবেক এই সদস্য বলেন, বিচারের কাঠগড়ায় আনা উচিত সকলকেই। তিনি আরও বলেন, যতটুকু সম্ভব যোগ্যতা যাচাই-বাছাই করেছিলাম আমরা। এখন উনারা আর্থিক দুর্নীতি করবেন কিনা তার পূর্বাভাস আগে থেকে করা সম্ভব নয়। এটা দূর থেকে দেখা সম্ভব না। যদি তারা আর্থিক দুর্নীতি করে থাকেন তবে প্রচলিত আইনেই তার বিচার করা সম্ভব।

বিশেষজ্ঞদের মত, কমিশন গঠনে যোগ্যতার মাপকাঠি নির্ধারণ করা দরকার। না হলে আবারও বিতর্কিত কমিশন গঠনের শঙ্কা জানান অভিজ্ঞ আইনজীবী শাহদীন মালিক। তিনি বলেন, আমি যদি ইচ্ছেমতো ৫-৬ জনকে সার্চ কমিটিতে নিয়ে বলি, আমাকে ১৫-১৬ জনের নাম দিন তাহলে তো কোনো প্রক্রিয়াই হলো না। আইন না থাকলে সার্চ কমিটি গঠনের কোনো ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির নেই।

আসছে ফেব্রুয়ারীতে বতর্মান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply