স্বামীর বন্ধু ছিল মামুনুল, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জড়াতেন শারীরিক সম্পর্কে: আদালতে ঝর্ণা

|

হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক।

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, নারায়ণগঞ্জ:

হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার বাদী জান্নাত আরা ঝর্ণা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

বুধবার (২৪ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের আদালতের বিচারক নাজমুল হাসান শ্যামলের আদালতে আসামি মামুনুল হকে উপস্থিতিতে জবানবন্দি নেয়া হয়। এসময় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কোয়ায় কোথায় নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে তার বিশদ বর্ণনা আদালতের কাছে তুলে ধরেন ঝর্ণা।

নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রাকিবুদ্দিন জানান, ঝর্ণার প্রথম স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন মাওলানা মামুনুল হক। স্বামীর বন্ধু হওয়ার সুবাদে তার সাথে পরিচয় ঘটেছিলো। তাদের সংসার সুখেই চলছিলো। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মামুনুল হক তার স্বামীর অনুপস্থিতিতে প্রায়ই ফোন দিয়ে খোশ গল্প করতেন।

রাকিবুদ্দিন আরও জানান, একপর্যায়ে স্বামীর সাথে কলহের জেরে দূরত্ব তৈরি হলে স্বামীর সাথে তার বিচ্ছেদ ঘটে। পরে মামুনুল হকের পরামর্শেই তিনি খুলনা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। মামুনুল হকই ঢাকায় তার থাকার ব্যবস্থা করেন। এসময় মামুনুল হক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন জায়গার নিয়ে গিয়ে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতেন। আদালতে জন্নাত আরা ঝর্ণা মামুনুল হক কখন কোথায় নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করেছেন তার বর্ণনা তুলে ধরেন।

ঝর্ণার জবানবন্দি (সাক্ষ্য) শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেছেন। মামুনুল হকের আইনজীবীদের করা বিভিন্ন প্রশ্নের জবার দেন জান্নাত আরা ঝর্ণা। এর আগে সকাল ৯টায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়। সাক্ষ্য প্রদান শেষে তাকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের স্লোগান দিতে দেখা যায়।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩ এপ্রিল জান্নাত আরা ঝর্ণাকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে সোনারগাঁ রয়্যাল রিসোর্টে উঠে। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে হোটেল কক্ষে তাদের দু’জনকে আটক করে। পরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা রাত আটটার দিকে রিসোর্টে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে মামুনুল হক ও ঝর্ণাকে তুলে নিয়ে যায়। ৩০ এপ্রিল ঝর্ণা সোনারগাঁ থানায় বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তিনি উল্লেখ করেন গত দুই বছর ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply