মাহফুজ মিশু:
সবার জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত না করে বুস্টার ডোজ চালু করা যৌক্তিক হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ১৮ বছরের বেশি অন্তত ছয় কোটি মানুষ এখনও এক ডোজ ভ্যাকসিনও পায়নি। এর বাইরে শিক্ষার্থীদের টিকাও নিশ্চিত করার পর বুস্টার ডোজ শুরুর তাগিদ দিচ্ছেন তারা। আর কারা তা পাবেন, সেটি নির্ধারণেও বিজ্ঞানসম্মত সিদ্ধান্ত নেয়ার তাগিদ তাদের।
এরই মধ্যে দুই ডোজ করোনার টিকা পেয়েছেন ৩ কোটি ৭০ লাখের মত মানুষ। আর প্রথম ডোজ নিয়ে পরেরটির অপেক্ষায় আরও প্রায় তিন কোটি। এছাড়াও ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে প্রায় ১২ কোটি মানুষকে দিতে হবে ভ্যাকসিন। সে হিসেবে এখনও বাকি ছ’কোটি মানুষ। এর সাথে যুক্ত হয়েছে স্কুল-কলেজের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী আরও প্রায় দু’কোটি শিক্ষার্থী। শুরু হয়েছে তাদের টিকাও। এরই মধ্যে দেশে বুস্টার ডোজ দেয়ার কথা বলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণে সবচেয়ে ঝুঁকি রয়েছেন ৬০ বছরের বেশি বয়সী জনগোষ্ঠী। তাই তাদেরকে টিকার বুস্টার ডোজ দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ওমিক্রনের ভয়াবহতার মাত্রা নিয়ে নিশ্চিত নয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও আগে সব মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা দেয়ার তাগিদ দিচ্ছে জাতীয় কারিগরি কমিটি। আর বুস্টারের ক্ষেত্রে যৌক্তিক অগ্রাধিকার তালিকা করারও পরামর্শ তাদের।
জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, যদি আমাদের মাঝে কেউ অনিরাপদ অর্থাৎ টিকার আওতায় আ আসে তাহলে সে কিন্তু শুধু নিজের জন্য ঝুঁকি না। টিকা না নেয়া ব্যক্তি তার আশেপাশের সকলের জন্য ঝুঁকির কারণ। তাই সবার টিকা নিশ্চিত করার পর বুস্টার ডোজের পরিকল্পনা করা উচিত।
আর পুরো জনগোষ্ঠীর টিকা আগে নিশ্চিত করতে না পারলে সংক্রমণ ঠেকানো কঠিন বলে আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের।
অণুজীব বিজ্ঞানী ড. সেজুতি সাহা বলছেন, দেশের বড় একটা অংশ এখনও এক ডোজ টিকাও পায়নি। অন্যদিকে, দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় আছেন আরও অনেকে। তাই আগে সবার টিকা নিশ্চিত করা জরুরি। এরপর বুস্টার ডোজের চিন্তাভাবনা করা যাবে।
আরও পড়ুন: দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে ওমিক্রন, ৩০ দেশে শনাক্ত
অবশ্য সরকার বলছে, টিকার সরবরাহ চ্যানেলে কোন সংকট নেই। তাই আগামীতে সংকট হবে না বলে দাবি পররাষ্ট্র মন্ত্রীর।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, বাংলাদেশের ভ্যাকসিনের সরবরাহের থামবে না। আমাদের যথেষ্ট সরবরাহ আছে। পাশাপাশি আমরা শীঘ্রই টিকা তৈরি প্রক্রিয়া শুরু করবো, তাই আমাদের ভ্যাকসিনের অভাব হবে না।
চীনের পাশাপাশি ভারত থেকেও দীর্ঘ বিরতির পর আসতে শুরু করেছে ভ্যাকসিনের চালান। পাশাপাশি কোভ্যাক্স থেকেও প্রত্যাশিত টিকা মিলবে বলে আশাবাদী সরকার।
Leave a reply