অনুপ্রবেশকারী ভেবে হত্যা: উত্তাল ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চল

|

ছবি: সংগৃহীত।

প্রতিরক্ষা বাহিনীর ভুল অভিযানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য নাগাল্যান্ডে ১৪ জন বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানির পর ওই অঞ্চলে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়েছে। শনিবার (৪ নভেম্বর) রাতের অভিযানে হতাহতের ঘটনার পর রোববার (৫ নভেম্বর) ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে ফের সংঘাতে জড়িয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে আরও একজন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, রোববার ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর একটি ক্যাম্পে পাথর নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনগণ। নতুন করে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তাবাহিনীর ছোড়া গুলিতে ফের একজন বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে।

এর আগে, শনিবার রাতে নাগাল্যান্ড রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ভুল অভিযানে ১৪ বেসামরিক নাগরিক নিহত ও অনেকে আহত হন। ওই সময় আইনশৃঙ্খলবাহিনীর এক সদস্যও নিহত হয়েছেন। নাগাল্যান্ডে একদল শ্রমিককে ভুলে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ মনে করে গুলি চালালে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এই ঘটনা ও পরবর্তী সহিংসতায় এক ডজনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন: অনুপ্রবেশকারী ভেবে গ্রামবাসীদেরই গুলি করে হত্যা করলো ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, স্থানীয় উপজাতি গোষ্ঠীর সদস্যদের নিহত হওয়ার খবরে তিনি ব্যথিত। নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেইফিউ রিও রয়টার্সকে বলেছেন, তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেয়া হবে। তিনি বলেন, গোয়েন্দা ব্যর্থতার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।

আইনশৃঙ্খলাবাহিনী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে অভিযানের সময় বারবার নির্দোষ স্থানীয়দের ভুল লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে বলে অভিযোগ করছে নাগাল্যান্ডের জনগণ। রোববার নাগাল্যান্ডের মন জেলায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শুরু করেছে রাজ্যের বেসামরিক জনগণ; যেখানে ১৪ উপজাতিকে হত্যা করা হয়েছে।

মন জেলার আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ক্যাম্প থেকে একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, ক্যাম্পের বাইরে স্থানীয়রা অবস্থান নিয়েছে। তারা ক্যাম্প লক্ষ্য করে ইট-পাথর নিক্ষেপ করছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ক্যাম্প বিক্ষোভকারীরা ঘিরে ফেলেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সর্বশেষ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ভারতের সামরিক বাহিনী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মন্তব্য জানা যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

৩০ অথবা তারও বেশি কয়লা খনি শ্রমিককে নিয়ে একটি ট্রাক আসাম রাইফেলসের ক্যাম্প অতিক্রম করে যাওয়ার সময় গোলাগুলি শুরু হয়। নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, সৈন্যদের কাছে ওই এলাকায় কিছু বিদ্রোহীর চলাচলের ব্যাপারে গোয়েন্দা তথ্য ছিল এবং ট্রাকটি দেখে ভুলেই খনি শ্রমিকদের বিদ্রোহী হিসেবে মনে করেন সৈন্যরা। এ সময় ট্রাক লক্ষ্য করে গুলি চালালে ছয়জন শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply