আখলাকুস সাফা:
সরকারি হাসপাতাল, ডাক্তার দেখছেন মাত্র ১০ টাকার টিকিটে। অথচ ওষুধ কিনতেই বেরিয়ে যাচ্ছে রোগী প্রতি হাজার টাকা। দরকারি ওষুধের একটিও মিলছে না সরকারি হাসপাতালে।
সরকারি গবেষণাই বলছে, ৯৭ ভাগ রোগী ওষুধ পান না সরকারি হাসপাতালে। দুই জেলার সদর ও উপজেলা হাসপাতালে চালানো যমুনার অনুসন্ধান বলছে, ওষুধ পাওয়া বাকি ৩ ভাগ পাচ্ছেন শুধু গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ। মূল ওষুধ কেনার সাধ্যই নেই তাদের। অথচ সরকারি হিসেবে জেলায় জেলায় পর্যাপ্ত মজুদ নিত্য দরকারি ওষুধের। মাঠের বাস্তবতাটা কী?
দৈনিক ওষুধ খরচ ২শ’ টাকা। ৮ মাসে সঞ্চয় ফুরিয়ে, কাজ হারিয়ে রাজধানীছাড়া নিঃস্ব দিনমজুর ছাইম এখন বগুড়া ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে। বিনামূল্যে যদি মেলে কিছু ওষুধ। বহির্বিভাগের ডাক্তার লিখলেন ৪টি ওষুধ। সাথে চিরকুটে লেখা আরও ২টি। প্রেসক্রিপশন দেখলোই না হাসপাতালের ওষুধ স্টোর। চিরকুট রেখে ধরিয়ে দিলো ৫ দিনের গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ!
স্টোরকিপার জানালেন, এই ওষুধ আমাদের এখানে নেই, বাইরে থেকে কিনে নিতে হবে। মূল ওষুধের ১টিও মিললো না সরকারি হাসপাতালে। তবে পাওয়া যাচ্ছে বাইরের ফার্মেসিতে। যা কিনতে লাগবে ৬৮০ টাকা।
ছাইম এখন এতো টাকা দিয়ে ওষুধ নিতে পারবে না জানিয়ে বলেন, এখন টাকা নেই, পরে নেয়া লাগবে। একবারে নিতে পারবো না আস্তে আস্তে কেনা লাগবে।
শেষমেশ বিনা ওষুধেই হাসপাতাল ছাড়লেন ছাইম।
একই ইস্যুতে ১ ডিসেম্বর’ অনুসন্ধান যশোরে। চর্মরোগের ডাক্তার দেখিয়ে কলেজ ছাত্রী সুইটিরও জুটেছে ১ পাতা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ। কিনতে হবে আসল ওষুধটাই। খরচ দাঁড়ালো ১ হাজার ৭০ টাকা। ১০ টাকার টিকিটে ডাক্তার দেখিয়ে মিলেছে শুধু এক পাতা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ।
বহির্বিভাগ, ডাক্তারের চেম্বার আর ওষুধ স্টোরে টানা ২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে যমুনার ৩ ক্যামেরা। অভাব নেই কোনো ওষুধের, দুপুরের আগেই সেই গ্যাস্ট্রিকের ওষুধও শেষ। কোথায় গেলো ওষুধ? জানতে চেয়ে উল্টো তোপের মুখে রোগী। ওষুধের কথা বলতেই এ সময় স্টোরকিপার রোগীর দিকে তেড়ে আসে।
আরও পড়ুন: বিএনপির আমলে কাউকে সুচিকিৎসার সুযোগ দেয়া হয়নি: প্রধানমন্ত্রী
অথচ সরকারি হিসেবে পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে নিত্য দরকারি সব ওষুধের। আর মাঠের বাস্তবতা হচ্ছে হাসপাতালে ওষুধ ঘাটতি, ফার্মেসিতে যা ভুঁড়িভুঁড়ি। খরচের হিসেবে দিনশেষে একমাত্র ভুক্তভোগী অসহায় রোগী।
ইউএইচ/
Leave a reply