পুলিশের পাশেই দাঁড়াচ্ছে না পুলিশ। গুলশানে মধ্যরাতে বেপরোয়া গতিতে বিএমডব্লিউ হাকিয়ে সার্জেন্টের বাবাকে চাপা দেন বিচারপতির ছেলে। আহত মনোরঞ্জন এখন মৃত্যুপথযাত্রী। এ ঘটনার বিচার চেয়ে ১২ দিনেও মামলা করতে পারেনি ভুক্তভোগী সার্জেন্ট মহুয়া হাজং। স্বজনদের দাবি, অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় অভিযোগ পর্যন্ত নিচ্ছেন না কর্মকর্তারা।
২ ডিসেম্বর রাত ২টা। বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি সড়কে ইউটার্নের জন্য অপেক্ষা করছিলেন মনোরঞ্জন হাজং। হঠাৎই বিপরীত দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে এসে তাকে চাপা দেয় লাল রঙের একটি বিএমডব্লিউ। পথচারীরা গাড়ি ও ড্রাইভারকে ধরে পুলিশে দেয়। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন বিচারপতির ছেলে সাইফ হাসান। সাথে ছিলেন তার স্ত্রী অন্তরা ও এক বন্ধু রোয়াদ। মনোরঞ্জনকে পাঠানো হয় পঙ্গু হাসপাতালে। যদিও কিছুক্ষণ পর পুলিশ ছেড়ে দেয় বিচারপতির ছেলে ও তার বন্ধুদের।
হাসপাতালে এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বিজিবির সাবেক হাবিলদার মনোরঞ্জন হাজং। দুটি অপারেশনে কেটে ফেলা হয়েছে একটা পা। অপারেশনের আগেরদিন করেছেন হার্ট অ্যাটাক। অবস্থা এতই খারাপ যে, তৃতীয় অপারেশন করা যাচ্ছে না। পঙ্গু থেকে সবশেষ মনোরঞ্জনকে বারডেম হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
আহত মনোরঞ্জনের ছেলে মৃত্যুঞ্জয় হাজং জানান, বাবার বাম পায়ের হাটুর হাড় ও হাটুর নিচের হাড় ভেঙ্গে গিয়েছে। ডান পায়ের অবস্থা আরও খারাপ। তিনি আরও বলেন, আমার বাবা বিজিবির একজন অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার এবং আমার দিদি একজন সার্জেন্ট। তারা প্রভাবশালীদের কাছে অসহায় বলে জানান মৃত্যুঞ্জয়।
ভুক্তভোগীর মেয়ে মহুয়া হাজং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সার্জেন্ট। ঘটনার পরদিন বনানী থানায় মামলা করতে যান। কিন্তু তারসাথে দেখা করেননি কোনো কর্মকর্তা। ফোনে বলা হয়, অভিযোগ রেখে যেতে। মঙ্গলবার পর্যন্ত অভিযোগটিও গ্রহন করেনি থানা।
পুলিশের সার্জেন্ট ও ভুক্তভোগীর মেয়ে মহুয়া হাজং বলেন, অভিযুক্তরা প্রভাবশালী ব্যক্তির সন্তান হওয়াতে আমার বাবার সাথে যা হয়েছে তার ন্যায়বিচার পাবো কিনা সে ব্যাপারে সন্দিহান।
এ বিষয়ে গুলশান বিভাগ পুলিশের উপ-কমিশনার আসাদুজ্জামান জানান, ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। শেষ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a reply