ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জোড়া খুনের নেপথ্যে ৮০ লক্ষ টাকা!

|

নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:

প্রতিবেশীর একটি হত্যা মামলা সমাধানের কথা বলে ৮০ লক্ষ টাকা নিয়েও সমাধান না করায় খুন হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার নাটঘর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী এরশাদুল হক (৩৫) ও তার সহযোগী বাদল সরকার (২৫)।

বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে এমন তথ্য জানিয়েছেন জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন।

হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়ার অভিযোগে আশরাফুল ইসলাম রাব্বী (৩৭) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি এমন জবানবন্দি দিয়েছেন। গত রোববার (১৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে জেলার কসবা উপজেলার বিদ্যানগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি সীমান্তপথে পালিয়ে ভারত যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। রাব্বী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কাজীপাড়া এলাকার মমিনুল ইসলামের ছেলে।

এর আগে, গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে নাটঘর ইউনিয়নের কুড়িঘর গ্রামে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন এরশাদুল ও বাদল। এরশাদুল নাটঘর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের ছেলে এবং বাদল ওই ইউনিয়নের নান্দুরা গ্রামের সন্তোষ সরকারের ছেলে। এ ঘটনায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন এরশাদুলের ছোট ভাই আক্তারুজ্জামান।

পুলিশ জানায়, গত ২০১৯ সালের ১লা এপ্রিল খুন হন এরশাদুল হকের চাচাতো ভাই সাইদুল্লাহ (৩০)। এ ঘটনায় নান্দুরা গ্রামের বাসিন্দা আবু নাছির ও তার ছেলে নজরুল ইসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন এরশাদুল।
পুলিশের দাবি গ্রেফতার আশরাফুল ইসলাম রাব্বী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, আবু নাছির এবং এরশাদুলের বাড়ি পাশাপাশি। মামলা আপস করার কথা বলে আসামিদের কাছ থেকে ৮০ লক্ষ টাকা নেন এরশাদুল। টাকা নিয়েও আপস না করে মামলা চালিয়ে যাওয়ায় এরশাদুলের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন নজরুল। সম্প্রতি ওই মামলায় নজরুলের বাবা আবু নাছিরকে কারাগারে পাঠান আদালত।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলেন, রাব্বীর সঙ্গে নজরুলের পূর্বপরিচয় ছিল। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, একটি ডাকাতির মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর গ্রেফতার এড়াতে গত ১ মাস ধরে তিনি নজরুলের সঙ্গে তার বাড়িতে ছিলেন। পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঘটনার দিন (১৭ ডিসেম্বর) রাব্বী এবং নজরুল পৃথক দুটি মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থলে যান। প্রথমে এরশাদুলকে বহনকারী মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন রাব্বী। এরপর নজরুল তার মোটরসাইকেল থামিয়ে এরশাদুল ও বাদলকে লক্ষ্য করে গুলি চালান।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের পরপরই রাব্বী ও নজরুল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দিকে চলে আসেন। এরপর তারা আলাদা হয়ে যান। রাব্বীকে বুধবার (২২ ডিসেম্বর) আদালতে হাজির করা হবে। নজরুলকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ হত্যাকাণ্ডে আর কেউ জড়িত আছে কি না সেটিও তদন্ত করা হচ্ছে।

জেডআই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply