চট্টগ্রাম ষোলোশহরের ২ নম্বর গেট ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বোমা হামলার সাথে জড়িত নব্য জেএমবির কমান্ডার মো. সেলিম (৩৩) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। পুলিশের ভাষ্য, মো. সেলিম নব্য জেএমবির একজন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কমান্ডার। তাকে আদালতে সোপর্দ করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) ভোরে চট্টগ্রাম শহরের আকবর শাহ থানার পোর্ট লিংক রোডের বাংলাবাজার এলাকা থেকে সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত মোহাম্মদ সেলিম (৩৩) লোহাগাড়ার মীরপাড়ার মৃত আবু তালেবের ছেলে।
চট্টগ্রামের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা বলছেন, পুলিশ বক্সে বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় এর আগে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৯ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন। আট জনের জবানবন্দিতেই বিস্তারিতভাবে উঠে এসেছে সেলিমের নাম ও নব্য জেএমবিতে তার ভূমিকার কথা। গ্রেফতারকৃতদের জবানবন্দি অনুযায়ী, সেলিম পুলিশ বক্সে বোমা হামলার মাস্টারমাইন্ড। সেলিম এ হামলার পরিকল্পনা যখন করেন তখন তিনি ফুটপাতে কাপড়ের টং দোকানে কাজ করতেন বলে জানা গেছে।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের চট্টগ্রামের উপ-কমিশনার ফারুক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অনেক চেষ্টার পর সেলিমকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। আদালতে তার পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। রিমান্ডের পর তার থেকে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
সিটিটিসি’র আরেক কর্মকর্তা বলেন, সেলিম লোহাগাড়া হকার মার্কেটের সামনে কাপড়ের এক টং দোকানে কাজ করতেন। ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন সেলিম। আজ ভোরে বাড়ি যাওয়ার জন্য আকবর শাহ থানার পোর্ট লিংক রোড দিয়ে নগরীতে ঢোকার চেষ্টা করেন তিনি। সেলিম কিভাবে জঙ্গী নেতা হলেন এবং নাশকতার পরিকল্পনা করেন তা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই জানা যাবে।’
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ষোলশহর ২ নম্বর গেট ট্রাফিক পুলিশ বক্সে রিমোট কন্ট্রোল্ড বোমার বিস্ফোরণে এক পথচারী শিশু ও দুই পুলিশ আহত হন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জঙ্গি কার্যক্রম নজরদারি সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ জানিয়েছিল যে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। তবে পুলিশ তখন থেকেই দাবি করে আসছে যে, এটা স্থানীয় জঙ্গিদের কাজ।
এ ঘটনায় ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক অনিল বিকাশ চাকমা বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। মামলার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীসহ মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারাও নব্য জেএমবির সদস্য বলে জানায় পুলিশ।
/এসএইচ
Leave a reply