রাজনীতি থেকে দূরে থাকার কারণ জানালেন সোহেল তাজ

|

সোহেল তাজ। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ বলেছেন, রাজনীতি হচ্ছে দেওয়ার স্থান, পাওয়ার নয়। আমি এ চিন্তা থেকে রাজনীতিতে এসেছি। আমি যখন দায়িত্ব পেয়েছি, তখন সেটা পবিত্র মনে করেছি। এ দায়িত্ব ক্ষণিকের, তাও মনে করেছি। মানুষ হিসেবে, রাজনীতিবিদ হিসেবে এই পবিত্রতা রক্ষা করা দায়িত্ব। যখন মনে হয়েছে, সে দায়িত্ব পালন করতে পারছি না, তখন সরে এসেছি। মনে হয়েছে, অন্য কেউ আসলে আরও ভালো সেবা দিতে পারবে। বিবিসি বাংলার এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।

দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না বলতে? এমন প্রশ্নের জবাবে সোহেল তাজ বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের যে নির্বাচনী ইশতেহার ছিল তা যুগান্তকারী। তাতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সুশাসনের কথা বলা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি। সোহেল তাজ জানান, এসব নিয়ে খুব উৎসাহী ছিলেন তিনি। যা সিস্টেমে পরিবর্তন আনার মতো বিষয় ছিল। কিন্তু তার পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না, মনে করায় তিনি সরে আসেন।

সোহেল তাজের সরে যাওয়াতে তরুণদের স্বপ্ন ভঙ্গ হলো না? জবাবে তিনি বলেন, আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। আমার পক্ষ থেকে অবদান রাখতে। কিন্তু পারছি না বলে ছেড়ে দিয়েছি। তা না করে দায়িত্বে থেকে যাওয়া উত্তম হতো কিনা, উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে সাবেক এই স্বারাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি চেয়েছি আমার মা-বাবার লিগ্যাসিতে যেন কোনো দাগ না পড়ে।

ভবিষ্যতে রাজনীতিতে ফেরার ইচ্ছে আছে কিনা এ বিষয়ে পরিস্কার করেনি সোহেল তাজ। বরং এ নিয়ে প্রশ্ন করলে কৌশলি উত্তর দেন।

সামাজিক ব্যাধি ও স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান নিয়ে এখন কাজ করছেন সোহেল তাজ। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি ও সরকারে সবচয়ে বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, সবাইকে রাজনীতির উর্ধ্বে ওঠে আসতে হবে। শুধু রাজনীতিবিদ না, এখানে সাধারণ মানুষেরাও সবকিছু পলিটিক্যিাল লেন্স দিয়ে দেখে থাকেন। এর থেকে বের হয়ে আসতে হবে। কে কোন দল করে তা নয়, মানুষকে কাজ দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।

হতাশ কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে সোহেল তাজ বলেন, হতাশ তো হব-ই। যদি সুবিচার না দেখি, অবিচার দেখি। তবে হতাশা থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টাও করেছেন বলে জানান তিনি। তরুণদের এসব থেকে বের হয়ে আসার ব্যাপারে সোহেল তাজের মন্তব্য, যোগ্যতা দিয়ে ওঠে আসতে হবে। সব সভ্যতার মূলে গৌরব আছে। আমাদেরও জন্ম হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। নতুন প্রজন্মকেও মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রাণিত করতে হবে ফাইট করতে। এই ফাইট অস্ত্রের নয়, সামজিক কর্মকাণ্ড ও সুন্দরভাবে দেশ গড়তে।

দেশের বড় সমস্যা বলতে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনাকে মনে করছেন সোহল তাজ। এই দু’টিকে দূর করা গেলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যাবে মনে করেন তিনি।

নিজের ব্যর্থতা প্রসঙ্গে জবাব দেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় তার লক্ষ্য অনেক বেশি। নিজের চাওয়া দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ। যেখানে মেধাভিত্তিক দেশ গড়া যাবে, আইনের শাসন থাকবে, সবাই বিচার পাবে। দুর্নীতি ও অব্যবস্থপনার অবসান ঘটলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ভালো হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সোহেল তাজ বর্তমানে সামাজিক ব্যাধি ও স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে কাজ করছেন। এসব বিষয়েও ওই সাক্ষাৎকারে কথা বলেন তিনি।

এমএন/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply