‘হয়তো বাবার সাথে এই শেষ দেখা’

|

আহমেদ তাওকীর:

হাসপাতালে বাবা! সেটা জানতো সন্তান। তবে শুনেছিলেন করোনা আক্রান্ত তার বাবা। সেকথা শুনেই বিদেশ থেকে বাবার কাছে ছুটে আসে সন্তান। এ বাবা ঢাকাই সিনেমার নন্দিত অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক সোহেল রানা। মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা প্রযোজনা দিয়ে চলচ্চিত্রের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার শুরু করা এই মানুষটি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে।

সময় কাল ১৯৭১। তখন সোহেল রানা অস্ত্র হাতে তুলে নেন লাল সবুজ পতাকা ছিনিয়ে আনতে। অতঃপর বুক ভরে নিঃশ্বাস নেয়া স্বাধীন বাংলায়।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকেই রূপালি পর্দায় যুক্ত হওয়া মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সিনেমা ‘ওরা ১১ জন এ! প্রযোজনা করেন এ সিনেমাটি। পরের গল্পটা বাংলা সিনেমার সাথে জড়িয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে!

বাংলাদেশ যখন বিজয়ের ৫০ বছরে বীর মুক্তি যোদ্ধা ও বরেণ্য চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব সোহেল রানা তখন স্বাধীন বাংলার আকাশ দেখার অনিশ্চয়তায়। হাসপাতালের অন্ধকার কক্ষে মুক্তির আলোর অপেক্ষায়। করোনা আক্রান্ত বাবা সোহেল রানাকে দেখতে সন্তান মাসরুর পারভেজ দেশে ফেরেন বুধবার। ছুটে যান বাবার সাথে কথা বলতে! কথা হলেও প্রতিউত্তরে পান দীর্ঘশ্বাস! দেখনে কথা বলতে না পারা বাবার বিষণ্ণ এক মুখ।

২৫ ডিসেম্বর করোনা আক্রান্ত হলে তাকে নেয়া হয় হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হলে নেয়া হয় আইসিউতে। সংকটাপন্ন এক অবস্থায় আছেন বাবা। সন্তান বলছেন, হয়তো বাবার সাথে তার এই শেষ দেখা। কতোটা অবস্থার অবনতি হলে সন্তান বাবাকে নিয়ে বলে এমন কথা? কতটুকু আশাহত হলে সন্তান বাবার ফেরার জন্য দোয়া চান? সে উত্তর হয়তো জানা নেই সন্তানের।

১৯৭১ এ সোহেল রানা ফিরেছিলেন বিজয়ী হয়ে। বিজয়ের ৫০ বছরে তিনি ফিরবেন মৃত্যু নামক শব্দটাকে জয় করে। সেই অপেক্ষায় তার স্বজন, অপেক্ষায় বাংলা সিনেমা অঙ্গন।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply