আলমগীর স্বপন:
ক্ষমতাবানদের রক্তচক্ষু ও প্রভাব উপেক্ষা করে বিলের লিজ নিয়েছেন প্রকৃত জেলেরা। পেয়েছেন মালিকানা। তাই আগের মতো আর মহাজনদের হয়ে মাছ ধরতে হয় না তাদের। সমিতির মাধ্যমে জোটবদ্ধ হয়ে হাওড়ের ১৩৭টি বিলের লিজ নেয়া জেলেদের আয়-রোজগার বেড়েছে কয়েকগুণ। পাশাপাশি মুনাফামুখী না হওয়া তাদের যত্নআত্তিতে হাওড়ে ফিরেছে বিপন্ন প্রজাতির অনেক মাছ।
সুনামগঞ্জের সদরপুরের জেলে পরিবারে জন্ম রাজচন্দ্রের। খুব অল্প বয়সেই নামতে বাধ্য হন, বাপ দাদার মাছ ধরার পেশায়। বিলের যে কাদাপানিতে বেড়ে ওঠা, চাইলেই সেখানে মাছ ধরতে পারতেন না তখন। ইজারাদার ক্ষমতাবান মহাজনদের দিনমজুর হিসেবে সারাদিন মাছ ধরে দিনশেষে মিলতো দেড়-দুশো টাকা।
সেই পরিস্থিতি এখন অনেকটাই বদলে গেছে। নেপথ্যে কাজ করেছে জাতিসংঘের কৃষি উন্নয়ন তহবিল- ইফাদের সহায়তায় এলজিইডির হাওড় উন্নয়ন প্রকল্পে দরিদ্র জেলেদের যুথবদ্ধ প্রচেষ্টা। সমিতি গঠনের মাধ্যমে সদরপুরের রাজচন্দ্র আর অমর বিশ্বাসের মতো দিরাইয়ের কুড়ালিয়া বিলের জেলেরা প্রভাবশালী মহাজনদের সাথে প্রতিযোগিতা করে পেয়েছেন বিলের মালিকানা।
এভাবে সমিতির কল্যাণে শুধু জেলেদের ভাগ্যই বদলায়নি বিলে ফিরে এসেছে বিপন্ন প্রজাতির বহু মাছ।
সুনামগঞ্জে ছোট বড় মিলিয়ে ১০৭৩টির মধ্যে ৩৮৩টি বিল প্রকৃত জেলেদের ইজারা দেয়ার জন্য চুক্তি করতে পেরেছে এলজিইডি। এর মধ্যে লিজ নিয়ে এখন পর্যন্ত ১৩৭টি বিলের মালিকানা পেয়েছে জেলেরা। তবে প্রকল্পটির পরিচালক প্রকৌশলী গোপাল চন্দ্র সরকার জানালেন, বেশিরভাগের ইজারা এখনও প্রভাবশালীদের দখলে।
এদিকে জাতিসংঘ কৃষি উন্নয়ন তহবিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর আর্নো হ্যামিলিয়ার্স জানালেন, প্রকৃত জেলেদের সমিতির মাধ্যমে হাওরের সব বিল পরিচালনার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে ইফাদ।
প্রসঙ্গত, দেশের হাওড় এলাকায় প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন মাছ ধরা পড়ে।
/এডব্লিউ
Leave a reply