তুরস্কে উটের রেসলিংয়ের সমালোচনায় প্রাণী রক্ষাকর্মী

|

উটের রেসলিং নিয়ে চলছে সমালোচনা।

উটের সাথে উটের লড়াই ভীষণ জনপ্রিয় তুরস্কে। ঐতিহ্যবাহী সেই উৎসবকে এবার সমালোচনার তীরে বিদ্ধ করলেন প্রাণী রক্ষা ও অধিকারকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, আয়োজনটি বিনোদনমূলক হলেও তাতে মারাত্মক আহত হয় নিরীহ প্রাণী, প্রাণ হারায় বহু উট। অবশ্য, নিন্দার মুখে উৎসব বন্ধে রাজি নন আয়োজকরা। তারা সাফাই গাইছেন প্রতিযোগিতার।

তুরস্কের সেলজুক শহরে বসেছে ৪০তম আন্তর্জাতিক উটের লড়াই প্রতিযোগিতা। যাতে, ১৫২টি পশু নিয়ে হাজির হয়েছেন মালিকরা। হাতের বুননের পোশাক, রং-বেরঙের সাজসজ্জা আর বাহারি জিনে সাজানো হয় এসব উট। লড়াইয়ের আগে অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ এড়াতে প্রাণীগুলোর মুখ দেয়া হয় বেঁধে। উটের রেসলিংয়ে অংশগ্রহণকারী নেসিপ কোতুরা বলেন, এটা লড়াই নয়, রেসলিং। ঠিক মানুষরা যেভাবে কুস্তি লড়েন, সেভাবেই অনুষ্ঠিত হয় আয়োজন। উটগুলোর মুখ বাঁধা থাকে। তাই, পরস্পরকে কামড় দিতে পারে না। সব ধরনের সুরক্ষা গ্রহণ করা হয় এখানে। শত-শত বছর ধরে চলে আসছে তুর্কির এ ঐতিহ্য।

কিন্তু, আয়োজনটি ঘিরে কয়েক বছর ধরেই সোচ্চার তুরস্কের প্রাণীরক্ষা অধিকার ফেডারেশন (এইচএওয়াইটিএপি)। তাদের দাবি, এটি পুরোদস্তুর অপরাধ। এইচএওয়াইটিএপি’র মুখপাত্র গুলগুন হামামশোগলু বলেন, প্রাণীদের মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে লড়াই করানো বড় অপরাধ। কীভাবে এটা সহ্য করতে পারে একজন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ? চোখের সামনে লড়াই করে কষ্টে ভুগছে জলজ্যান্ত প্রাণীগুলো। পরস্পরকে মেরেও ফেলছে। অথচ, সেটা দেখেই হাততালি দিচ্ছে দর্শকরা। আর্থিকভাবে লাভবানও হন অনেকে।

আরও পড়ুন: স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের পরিকল্পনা শুনে আঙুল ভেঙে দিলো স্ত্রী

তবে এই অভিযোগে উৎসব বন্ধে রাজি নন আয়োজকরা। তাদের পাল্টা দাবি, ঐতিহ্য কেড়ে নিতেই চলছে এই অপতৎপরতা। শেলজুক পর্যটন মন্ত্রণালয় সাবেক পরিচালক মেহমাত ফালাকালি বলেন, প্রতিপক্ষকে কামড়ে দেয়া বা হামলা চালানো উটদের পক্ষে একপ্রকার অসম্ভব। কারণ, রেসলিং এলাকায় ২২ জন স্বেচ্ছাসেবী থাকেন। প্রত্যেক উটের জন্য ১১ কর্মী। তাদের কাজই হলো দড়ি দিয়ে বাঁধা উটদের আলাদা রাখা। যখনই রেফারি নেতিবাচক কিছু লক্ষ্য করেন; তিনি প্রাণীগুলোকে সরানোর ইশারা দেন। সুতরাং, যেসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা অপ্রাসঙ্গিক।

হাজার বছর ধরে তুর্কি নৃগোষ্ঠীদের ঐতিহ্যের অংশ উটের লড়াই। তবে, ১৯২০ সালে রাষ্ট্রের জন্য উড়োযান কিনতে প্রথমবার জাতীয় পর্যায়ে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে তুরস্কের বিমান পরিবহন সংস্থা।

আরও পড়ুন: অনলাইনে পিৎজা অর্ডার করে ১৩ লাখ টাকা খোয়ালেন এক নারী


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply