সিনিয়র করেসপনডেন্ট, নাটোর:
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাবিব হিমেলের পরিবার শোকে স্তব্ধ। দুর্ঘটনার দমকা হাওয়া তছনছ করে দিয়েছে তার পরিবারকে। প্রথমে তার বাবা-মা সড়ক দুর্ঘটনার স্বীকার হন। সে ধাক্কায় বাবা বেঁচে গেলেও মাকে আর স্বাভাবিক অবস্থায় পাননি হিমেল। এরপর দাদিকে হারানোর পর নিজেও চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
হিমেলের নানাবাড়ি নাটোর শহরের কাপুড়িয়াপট্টি মহল্লার শোকস্তব্ধ পরিবারে গিয়ে দেখা যায়, সবাই নির্বাক হয়ে গেছে মেধাবী শিক্ষার্থী হিমেলের অকাল প্রয়ানে। মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে আটটায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে ট্রাক পিষ্ট করে দেয় সম্ভাবনাময় মাহমুদ হাবিব হিমেলকে।
সড়ক দূর্ঘটনার করাল গ্রাস বার বার আঘাত হেনেছে হিমেলের পরিবারে। ২০১৩ সালের ১৭ অক্টোবর বগুড়া থেকে মোটর সাইকেলে ফেরার পথে নাটোরের শেরকোল এলাকায় স্থানীয়ভাবে তৈরি যান ধাক্কা দেয় হিমেলের বাবা ও মাকে। সে ধাপে বাবা বেঁচে গেলেও হিমেলের মা হয়ে পড়েন অনেকটাই নির্বাক। মাথায় ৩২টা শেলাই দেয়ার পর আর স্বাভাবিক জীবনে ফেরেননি তিনি।
নিহত হিমেলের মা মনিরা আক্তার জানান, অটোর ধাক্কায় তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পান। সেই থেকে কিছইু মনে রাখতে পারেন না। হিমেলের বাবা আহসান হাবিবও আহত হন। ২০১৭ সালে হিমেলের বাবা কিডনি জনিত অসুস্থতার কারণে মারা যান।
হিমেলের বড় খালু আব্দুস সবুর তালুকদার জানান, শোকস্তব্দ পরিবারে শোকের বার্তা নিয়ে আসে আরেকটি মৃত্যু। ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর প্রথম শ্রেণি পড়ুয়া নাতিকে স্কুলে নেয়ার পথে বগুড়ার শেরপুর এলাকায় দ্রুতগামি বাসের চাপায় প্রাণ হারান ষাঠোর্ধ্ব হিমেলের দাদি আমেনা বেওয়া। সব শেষ চলতি বছরের পহেলা ফেব্রুয়ারি নিজ ক্যাম্পাসে ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক্স ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাবিব হিমেল। সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পরিবার পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে গেল।
/এনএএস
Leave a reply