মিশরের সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্র তারকা তিনি। প্রথম আরব যার অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়েছে বিশ্ব চলচ্চিত্রে। সেই ওমর শরীফের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী আজ। এই দিনে সার্চ ইঞ্জিন গুগল তার হোমপেজে টাঙ্গিয়েছে ওমর শরীফের ছবি। জন্মদিনের এই ক্ষণে এক নজরে দেখে নেয়া যাক ওমর শরীফের জীবনচরিত।
# জন্ম ১৯৩২ সালে মিসরের আলেক্সান্দ্রিয়া, সিরীয়-লেবানিজ পরিবারে। জন্মের সময় নাম ছিলো মিকেল দিমিত্রি শালৌব।
# অভিনয়ের জগতে পা রাখার আগে ওমর কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত ও পদার্থবিদ্যায় পড়াশোনা করেন এবং বেশ কয়েক বছর বাবার কাঠের কোম্পানিতে কাজ করেন।
# পারিবারিক ব্যবসা ছেড়ে ওমর অভিনয় শিখতে বিলেতে পাড়ি জমান। লন্ডনে রয়েল একাডেমি অফ ড্রামাটিক আর্টসে নিজেকে প্রস্তুত করেন রুপালী পর্দার জন্য।
# ১৯৫৪ সালে তার অভিনয় জীবনের শুরু। ক্যারিয়ারের শুরুতেই তিনি অভিনয় করেন সে সময়ে মিশরের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী ফাতেন হামামার বিপরীতে।
# ১৯৫৫ সালে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং ওমর শরীফ নামটি গ্রহণ করেন। ওই বছরই তিনি বিয়ে করেন ফাতেনকে। প্রায় এক দশক সংসার করার পর তারা আলাদা হয়ে যান। ১৯৭৪ সালে তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর আর বিয়ে করেননি তিনি।
# বেশ কিছু মিশরীয় চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পরে ওমর শরীফ নজরে পড়েন ব্রিটিশ নির্মাতা ডেভিড লিনের। তিনি ওমরকে বেছে নেন লরেন্স অফ অ্যারাবিয়া ছবিতে আরব যোদ্ধার ভূমিকায়।
# তবে এই খ্যাতির জন্য চড়া মূল্য দিতে হয়েছে ওমরকে। শেষ জীবনে এক সাক্ষাতকারে তিতি বলেন, “এই খ্যাতিই আমাকে স্ত্রী-পরিবার থেকে দুরে ঠেলে দেয়। আমাদের দেখা-সাক্ষাত কমে যায়, এক সময় সম্পর্কটাই শেষ হয়ে যায়। মিশরীয় তারকা হয়ে থাকলেই বোধ হয় জীবনটা আরো সুখের হতো”
# ডক্টর জিভাগো সিনেমার জন্য তৃতীয় গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার জয়ের পর নিম্নমুখী হয় ওমর শরীফের ফিল্ম ক্যারিয়ার। অভিনেতার মতে, এসময় নতুন নির্মাতা নিজেদের সমাজের প্রেক্ষাপটে ছবি বানাতে বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠে। যে কারণে কদর কমে যায় বিদেশি অভিনেতাদের।# সত্তরের দশকে অনেক আজেবাজে ছবিতে দেখা যায় ওমর শরীফকে। ২০০৪ সালে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, “লোকজন এমনকি পরিবারের সদস্যরাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করতে থাকে। নিজের মর্যাদা আর আত্মসম্মানই যেন বিকিয়ে দিয়েছিলাম।
# চলচ্চিত্রের বাইরে ওমর শরীফ কিন্তু একজন বিশ্বমানের তাস খেলোয়াড়। ব্রিজ খেলায় তিনি এতোটাই সিদ্ধহস্ত ছিলেন যে, শিকোগো ট্রিবিউন পত্রিকায় এ খেলা নিয়ে নিয়মিত কলামও লিখেছেন এক সময়।
# ২০১৫ সালে আলজেইমারস রোগে আক্রান্ত হন ওমর শরীফ। সে সময় তিনি তার ক্যারিয়ারের হিট ছবিগুলোর নামও ভুলে গিয়েছিলেম। ওই বছরই মে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ওমর শরীফের। এর ৬ মাস আগে মারা যান তার প্রথম স্ত্রী ফাতেন হামামা।
# ওমর শরীফ তার ক্যারিয়ারে তিনটি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের পাশাপাশি পেয়েছেন একটি অস্কার নমিনেশন। ২০০৩ সালে একটি সেজার পুরস্কারও জেতেন তিনি। সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে অবদানের জন্য ২০০৫ সালে তাকে ইউনেস্কো আলবার্ট আইনস্টাইন পদকে ভূষিত করা হয়।
Leave a reply