প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছে।
শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নবগঠিত সার্চ কমিটিতে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান, রাষ্ট্রপতি মনোনীত সাবেক ইসি মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও আনোয়ারা সৈয়দ হক, পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন ও সিএজি মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরীকে সার্চ কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান
সার্চ কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ইতোপূর্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে ২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। আগের দুই সার্চ কমিটিতেও সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
এসএম কুদ্দুস
২০২০ সালের ২৯ মে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান রাজবাড়ীর কৃতি সন্তান বিচারপতি এসএম কুদ্দুস।
মুসলিম চৌধুরী
বাংলাদেশের মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মুসলিম চৌধুরী। ২০১৭ সালে সচিব হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে যোগদান করেন তিনি। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ক্যাডারে যোগ দিয়ে কন্ট্রোলার জেনারেল অব অ্যাকাউন্টস, কন্ট্রোলার জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স এবং অর্থ বিভাগের উপসচিব, যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মুসলিম চৌধুরী।
সোহরাব হোসাইন
বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা সোহরাব হোসাইন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সরকারের বিভিন্ন পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিসিএস প্রশাসন অ্যাকাডেমির রেক্টরসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত ছিলেন।
ছহুল হোসাইন
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনার ছিলেন ছহুল হোসাইন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে অবসরে রয়েছেন তিনি। ছহুল হোসাইন জেলা জজ হিসেবে দেশের বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া আইন সচিব হিসেবেও কর্মরত ছিলেন তিনি। গত নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার। অবশ্য তিনি মনোনয়ন পাননি।
আনোয়ারা সৈয়দ হক
কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ারা সৈয়দ হক একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। উপন্যাসে অবদানের জন্য তিনি ২০১০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। পারিবারিক জীবনে তিনি সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের স্ত্রী। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সম্পূর্ণ নয় মাস তিনি পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। ঢাকা এয়ারবেসের মেডিকেল সেন্টারে তিনি চিকিৎসা করেছেন সৈনিকদের এবং তাদের স্ত্রী-পুত্র-কন্যাদের। ১৯৮৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে মনোরোগ বিভাগে সহকারী প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি জাতীয় মাদকাসক্তি নিরময় কেন্দ্রের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ছিলেন ঢাকার মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের পরিচালক ও প্রভাষক। ১৯৯৮ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে অবসর নেন।
প্রসঙ্গত, ৩০ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে পাস হওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২ এ রাষ্ট্রপতির সম্মতির পর গেজেট প্রকাশ করা হয়। আইন অনুযায়ী, আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠিত হবে। আইনে বর্ণিত যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিবেচনা করে তারা ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবেন। ১০ জনের মধ্য থেকেই ৫ জনকে নিয়ে রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।
/এডব্লিউ
Leave a reply