আশঙ্কার চেয়েও দ্রুত গলছে বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের সাউথ কোল গ্লেসিয়ার নামক হিমবাহটি। এভাবে চলতে থাকলে ২১০০ সালের মধ্যে পুরোপুরি গলে যেতে পারে দুই হাজার বছরের পুরোনো এ হিমবাহ। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমনটাই জানিয়েছেন নেপালের একদল গবেষক। খবর এনডিটিভির।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ আশঙ্কার কথা জানান দ্য ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেইন ডেভেলপমেন্ট (আইসিআইএমওডি) এর গবেষকরা। হিমবাহ গলে গেলে এভারেস্টের উচ্চতা কমতে পারে বলেও জানান তারা।
এক গবেষণা প্রতিবেদনে আইসিআইএমওডি জানিয়েছে, নব্বইয়ের দশকের শেষ ভাগেই এভারেস্টের বরফ আশঙ্কাজনক হারে গলতে শুরু করে। ৮০২০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত সাউথ কোল গ্লেসিয়ার প্রতিবছর প্রায় দুই মিটার করে গলে যাচ্ছে বলে জানান তারা। গবেষকেরা আরও বলেন, যতটা সময় নিয়ে এ হিমবাহ তৈরি হয়েছে, তার চেয়ে ৮০ গুণ দ্রুত গলছে হিমবাহটি। ফলে চলতি শতকের মাঝামাঝিতে এটি পুরোপুরি গলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। জলবায়ু পরিবর্তনসহ মানবসৃষ্ট কারণেই গ্লেসিয়ারটি গলছে বলে জানান তারা।
গবেষণা প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, এভারেস্টের হিমবাহ তুষার দ্বারা সুরক্ষিত থাকে। এভারেস্টের হিমবাহ তৈরি হতে কমবেশি দুই হাজার বছর লেগেছে, কিন্তু সেটা গলতে সময় লাগছে মাত্র ২৫ বছর। আইসিআইএমওডির আশঙ্কা, হিমালয়কে ঘিরে থাকা এ অঞ্চলের ভবিষ্যৎ মারাত্মক হুমকির মুখে। কারণ, এ অঞ্চলের শত কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা হিমালয় থেকে নেমে আসা নদীর পানির ওপর নির্ভরশীল।
জানা গেছে, নেপালসহ আরও আটটি দেশের গবেষকদের নিয়ে গঠিত একটি দল এ গবেষণায় যুক্ত ছিল। গবেষণা প্রতিবেদনটি নেচার পোর্টফোলিও জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়, রেডিওকার্বন পদ্ধতিতে গবেষকেরা সাউথ কোল গ্লেসিয়ারের বয়স সম্পর্কে অনুমান করেছেন। দেখা গেছে, এটির বয়স প্রায় দুই হাজার বছর।
এর আগে, এভারেস্টের হিমবাহ গলে যাওয়া নিয়ে সতর্ক করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মেইনের একদল বিজ্ঞানী। ইউনিভার্সিটি অব মেইনের ক্লাইমেট চেঞ্জ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক পল মায়েস্কি বলেন, সাউথ কোল গ্লেসিয়ার এভারেস্টের ভারসাম্য রক্ষায় মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। পৃথিবীর ছাদেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ায় আমরা শঙ্কিত।
/এসএইচ
Leave a reply