দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে তরুণী বিক্রির চেষ্টাকালে গ্রেফতার ১

|

রাজবাড়ী প্রতিনিধি :

বেশি বেতনে ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রাজবাড়ী গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে বিক্রির চেষ্টাকালে ১৯ বছর বয়সী এক তরুণীকে উদ্ধার করেছে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ। এসময় ঘটনার‌ সাথে জড়িত রফিক সরদার (৩৪) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 

মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পল্লীর প্রধান গেট থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। এসময় রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার নাদুরিয়া বাস্তপুর গ্রামের বাসিন্দা মজিবর কসাই (৫০) নামে এক ব্যক্তি কৌশলে পালিয়ে যায়।  গ্রেফতারকৃত রফিক গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের তাহের কাজীর পাড়া গ্রামের উম্বার সরদারের ছেলে।

উদ্ধার হওয়া তরুণী জানায়, তার বাড়ি মাগুরা জেলায় এবং তিনি একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতেন। তার নানা গরু ব্যবসায়ী। গরু কেনাবেচা ব্যবসার কারণে পলাতক ব্যক্তি মজিবর কসাইয়ের সাথে পরিচয় ছিল। ফলে তার নানা বাড়িতে যাতায়াত ছিল ঐ ব্যক্তির। ওই সময় ওই ব্যক্তির সাথে তার পরিচয় হয়। একদিন মজিবর কসাই তাকে জিজ্ঞাসা করে সে কত বেতন পায়। তখন সে জানায়, মাসে ৭ হাজার টাকা।

পরে মজিবর কসাই তার নানাকে প্রস্তাব দেয় যে অনেক ভালো বেতনে তার চাকরির ব্যবস্থা করে দিবে। মজিবর কসাইয়ে কথায় সে ও তার নানা রাজি হয়। এ অবস্থায় ২০ ফেব্রুয়ারি সে তার নানার সাথে টাঙ্গাইল তার খালার বাড়িতে রওনা হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে পৌঁছালে মজিবর কসাই রফিক সরদারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে জানান, উনি ভালো চাকরির ব্যবস্থা করে দিবেন।

এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি রফিক সরদার ফোনে তাদের জানায়, ভালো চাকরির ব্যবস্থা হয়েছে। এবং বাসাও ঠিক করা হয়েছে, তারা যেন দ্রুত দৌলতদিয়ায় চলে আসে। পরে ওই দিনই বিকেলে রফিকের কথায় বিশ্বাস করে দৌলতদিয়ায় চলে আসে। দৌলতদিয়া রেলস্টেশন এলাকায় তার নানা পাশের দোকানে গেলে রফিক তাকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর প্রধান গেটে নিয়ে যায়। এসময় সে (তরুণী) তার নানার জন্য অপেক্ষা করতে বললে রফিক জানায়, তোমার নানা বাসা চেনেন, উনি চলে আসবেন। অসুবিধা নেই ওখানে তোমার মত আরও অনেক মেয়ে আছে।

খানিকটা আগাতেই সে বুঝতে পারে তাকে যৌনপল্লীতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসময় সে ভেতরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। এ অবস্থায় তাকে জোরপূর্বক যৌনপল্লীতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সে (তরুণী) চিৎকার করতে শুরু করে। এসময় স্থানীয়রাসহ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মুক্তি মহিলা সমিতির কর্মীরা এগিয়ে এসে থানা পুলিশকে খবর দেয়।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই তরুণীকে উদ্ধার ও একজনকে গ্রেফতার করে। ঘটনায় জড়িত অপর ব্যক্তি কে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। পরে উদ্ধার হওয়া তরুণী বাদী হয়ে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

/এনএএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply