রিয়াজ রায়হান:
রাতের প্রথম ভাগ যতোটা জমজমাট, কোলাহলপূর্ণ, রাজধানীবাসীর জন্য শেষভাগটা ততোটাই ভয়ঙ্কর। এ সময়ে তৎপরতা বাড়ে ছিনতাইকারীদের। যাদের হাতে সর্বস্ব হারাচ্ছেন অনেকে। প্রাণও দিতে হচ্ছে কাউকে কাউকে।
রাজধানীতে ছিনতাই প্রতিরোধে নিয়মিত পুলিশের টহল থাকার কথা থাকলেও সরেজমিনে চোখে পড়ে না খুব একটা। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছেন তারা।
কাঁচামাল ফেরি করে বিক্রি করা মোশাররফ প্রাণ হারান ছিনতাইকারীদের হাতে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি ভোর পৌনে পাঁচটায় যাত্রাবাড়ীর দয়াগঞ্জে এই ঘটনা ঘটে। ঠিক চারদিন পর একই সময়ে একই এলাকায় গিয়ে দেখা যায় কোনো পুলিশি টহল নেই, অনেকটাই ফাঁকা পুরো এলাকা। মিনিট বিশেক পরে সায়েদাবাদ মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের অংশ। ছিনতাইকারীদের পছন্দের স্থান এইসব সুনসান এলাকা। ঘণ্টাখানেক পুরান ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরেও দৃশ্যমান পুলিশি তৎপরতা চোখে পড়েনি।
রাজধানীর ধানমন্ডির অবস্থাও একই। শংকর বাসস্ট্যান্ড ছিনতাইপ্রবণ স্থানগুলোর অন্যতম। অথচ শংকর থেকে সাইন্সল্যাব পর্যন্ত দেখা মেলেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যের। ভোরে বেশি বেকায়দায় পড়েন রিকশার যাত্রীরা।
রাতের শেষভাগে যারা রাজধানীতে প্রবেশ করেন তাদের অনেকেই ভয়ে বাস কাউন্টার ত্যাগ করেন না। পুলিশের তথ্য মতে, পুরান ঢাকার কয়েকটি এলাকাসহ মোহাম্মদপুর, মিরপুর ও উত্তরার কিছু অংশে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য সবচেয়ে বেশি।
নগরীতে হরমামেশাই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও মামলার পরিসংখ্যানের চিত্রটা ঠিক উল্টো। গেল পাঁচ বছরের হিসাব বলছে, প্রতি বছর মামলা হয়েছে দেড়শ’র কম। ছিনতাইয়ের পর মামলায় যেতে চান না বেশিরভাগ ভুক্তভোগী। যদিও কর্মকর্তাদের দাবি, রাতে বাড়ানো হয়েছে পুলিশি টহল।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, ভাসমান যারা মাদকসেবী আছে তাদের কাছে যখন টাকা থাকে না, তখন তারা এই ছিনতাইয়ের কাজে জড়িত হয়ে যায়। ছিনতাইয়ের কিছু কিছু সময় আছে সাধারণত খুব সকালের দিকে। ওই সময়ে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। ছিনতাই হলে দ্রুত মামলা নিতে থানাগুলোতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ইউএইচ/
Leave a reply