সম্ভব হলে এখুনি রাশিয়া ছেড়ে চলে যেতাম। কিন্তু এই মুহূর্তে চাকরি ছাড়া বেশ কঠিন, বলেছেন আন্দ্রে নামের একজন রুশ। মস্কোতে সুদের হার অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ায় বন্ধক রাখার সামর্থ্য নেই তার। আন্দ্রের মতো এমন অনেকেই এখন টের পেতে শুরু করেছেন ইউক্রেন হামলার প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার ওপর আরোপিত পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব। খবর বিবিসির।
৩১ বছর বয়সী একজন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইনার বলেন, যত দ্রুত সম্ভব বিদেশি গ্রাহকদের খুঁজে বের করতে হবে আমার। প্রথম কিস্তি থেকে এ পর্যন্ত যত টাকা জমিয়েছি, তা দিয়ে রাশিয়া থেকে বেরিয়ে যেতে হবে অতি সত্বর। আমি সত্যিই ভয় পাচ্ছি। পার্টি যেমনটা চায়, তার বিরুদ্ধে কিছু বললেই ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। আমি লজ্জিত, এমনটা দেখার জন্য ভোট দিইনি আমি।
রাশিয়ার সামনে যে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এসেছে, সেটাকে অর্থনৈতিক যুদ্ধ হিসেবেও অভিহিত করা যায়। এই নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য হচ্ছে, দেশটিকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কোণঠাসা করে অর্থনৈতিক মন্দার মুখে ফেলা। পশ্চিমা নেতারা আশা করছেন যে, অভূতপূর্ব এসব পদক্ষেপ ক্রেমলিনের চিন্তাধারায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে সমর্থ হবে।
স্বাভাবিকভাবেই প্রাথমিক ধাক্কাটা লেগেছে সাধারণ রুশদের মাঝে। তাদের সঞ্চয় শেষ হয়ে যাচ্ছে, ব্যাহত হচ্ছে জীবনযাত্রা। নিষেধাজ্ঞার আওতায় যেসব রুশ ব্যাংক রয়েছে, রাশিয়ানদের ভিসা এবং মাস্টার কার্ড থেকেও মুছে গেছে সেসব। এমনকি অ্যাপল পে এবং গুগল পে’র মতো সেবা ব্যবহার করতে পারছে না রুশ জনগণ।
আরও পড়ুন: পরমাণু ‘প্রতিরোধী’ বাহিনীকে উচ্চ সতর্কতায় থাকার নির্দেশ পুতিনের
মস্কোর ৩৫ বছর বয়সী একজন প্রজেক্ট ম্যানেজার বিবিসিকে জানিয়েছেন কিছু সমস্যার ব্যাপারে। তিনি বলেন, আমি সব সময় ফোনের মাধ্যমেই মূল্য পরিশোধ করি, কিন্তু এবার কাজ হলো না। আমার মতো অনেকেই দেখলাম একই সমস্যায় পড়েছে। পরে জানলাম, যে ব্যাংকে আমার অ্যাকাউন্ট সেটা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে। দুটো অ্যাপের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করতাম, সেটাও হচ্ছে না।
ডলার বা রুবল কিছুই নেই! ওহ! রুবল আছে, তবে আমার ওতে আগ্রহ নেই, বলছিলেন এটিএম বুথে দাঁড়ানো ৩০ বছর বয়সী এক যুবক। তিনি আরও বলেন, আমি জানি না সামনে কী আসতে যাচ্ছে। ভয় হচ্ছে, উত্তর কোরিয়া বা ইরানের অবস্থা হয় কিনা রাশিয়ার!
আরও পড়ুন: ‘নিরাপরাধদের ওপরও হামলা করছি, মা’, রুশ সেনার শেষবার্তা শোনালেন ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত
এম ই/
Leave a reply