শিক্ষকের লাঠির আঘাতে নষ্ট হতে চলেছে মাদরাসা ছাত্রের চোখ

|

ছবি: সংগৃহীত

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর:

যশোরের মণিরামপুরে শিক্ষকের লাঠির আঘাতে আরিফুল ইসলাম (১৬) নামে এক কওমি মাদরাসা ছাত্রের বাম চোখ নষ্ট হতে চলেছে। ক্লাসে না পড়ে বসে থাকার কারণে শিক্ষক হাফিজুর রহমান পিটিয়ে তার চোখের কর্ণিয়া নষ্ট করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ।

সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের একটি হাফেজি মাদরাসায় ঘটনাটি ঘটলেও বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ)। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর রহমান মাদরাসা ছেড়ে পালিয়েছেন।

জানা গেছে, আরিফুল শ্যামকুড়ের বুজতলা ওমর ইবনে খাত্তাব (রা:) হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিম খানার হিফজ বিভাগের ছাত্র। সে উপজেলার জোঁকা গ্রামের আয়ুব আলীর ছেলে। গত তিন দিন ধরে আরিফুল ঢাকা ইস্পাহানি ইসলামি চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আহত আরিফুল জানিয়েছে, দেড় বছর ধরে আমি ওমর ইবনে খাত্তাব (রা:) হাফেজিয়া মাদরাসায় পড়ি। আমি আল কোরআনের ১৫ পারা হিফজ সম্পন্ন করেছি। সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রতিদিনের মতো মাদরাসায় পড়ছিলাম। আগে থেকে সমস্যা থাকায় পড়ার সময় আমার চোখে চশমা ছিলো। পড়া থামিয়ে আমি বসে থাকায় হুজুর ডেকে মারপিট করেন। একপর্যায়ে তার বেতের আঘাত আমার বাম চোখে লাগে। এসময় চশমা ভেঙে কাচ ভিতরে ঢুকে চোখের কালো অংশ তিন ভাগ হয়ে যায়।

আরিফুলের বড় ভাই মামুন হোসেন বলেন, গত সোমবার এ ঘটনা ঘটলেও মাদরাসার শিক্ষকরা আমাদের কিছু জানাননি। তারা নিজেরা আরিফুলকে মণিরামপুরে ও যশোরে ডাক্তারের কাছে নেন। সেখানে চিকিৎসা করতে ব্যর্থ হয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় আমাদের খবর দেন তারা।

আরিফুলের পিতা আয়ুব হোসেন বলেন, খবর পেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে আসি। ছেলের চোখের অবস্থা ভাল না। ওরে নিয়ে দৌঁড়াতে গিয়ে থানায় অভিযোগ করতে পারিনি।

আয়ুব হোসেন আরও বলেন, ওই শিক্ষক পলাতক রয়েছেন। মাদরাসার প্রধান শিক্ষক আমাদের সাথে ঢাকায় আছেন। তারা চিকিৎসার সব খরচ দিচ্ছেন। এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার হাফিজুর রহমানকে কল করা হয়েছে। তিনি ফোন ধরেননি। শ্যামকুড় ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, ঘটনা শুনে ওই ছাত্রের পরিবারের সাথে কথা বলেছি। ছেলেটার চোখ ভাল হওয়া নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখনও পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়নি। ঢাকা থেকে তারা ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।


/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply