স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর:
ইউক্রেনে আটকে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’তে রকেট হামলার পর সেখানে থাকা ২৮ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয় বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ)। ওই জাহাজেই ছিলেন ক্যাডেট ফারজানা ইসলাম মৌ। তিনি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলা সদরের ফকরুল ইসলামের মেয়ে। জাহাজে আটকে থাকা অবস্থায় ভিডিও বার্তার মাধ্যমেও উদ্ধারের আকুতি জানিয়েছিলেন মৌও। তবে বর্তমানে তিনি নিরাপদে আছেন জেনে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর থেকেই উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছিল মৌয়ের পরিবারের লোকজন। তবে এখন স্বস্তি ফিরলেও তিনি কোথায় আছে তা জানে না পরিবারের সদস্যরা।
২০১৫ সালে রাজৈর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকার একটি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে ৫৪তম ব্যাচে ভর্তি হন মৌ। লেখাপড়া শেষ করে ইন্টার্নি করার জন্য একবছর আগে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে যুক্ত হন তিনি।
সর্বশেষ তুরস্ক থেকে রওনা হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি জাহাজটি ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে পৌঁছায়। ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে যুদ্ধ শুরু হওয়ায় জাহাজটি বন্দর ত্যাগ করতে পারেনি। এ অবস্থায় ২ মার্চ বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে রকেট হামলা চালানো হয়। সে হামলায় বরগুনার বেতাগী উপজেলার থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর নিহত হন।
মৌয়ের বড় ভাই ফাহাদ মাহামুদ লিমন বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কে ছিলাম। ঠিকমতো ছোট বোনের সাথে যোগাযোগও করতে পারিনি। বৃহস্পতিবার রাতে তার সাথে কথা হয়েছে। সে নিরাপদে আছে। তবে কোথায় কি অবস্থায় আছে তা জানি না।
এর আগে, জাহাজে আটকে থাকা অবস্থায় অন্যান্য সদস্যদের মতো লাইফে এসে উদ্ধারের আকুতি জানিয়েছিলেন মৌও। তিনি বলেন, আমি ইঞ্জিন ক্যাডেট মৌ। বাংলার সমৃদ্ধি থেকে বলছি। আমাদের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার স্যার মারা গেছেন। আমাদের শিপে বম্বিং হইছে। আমরা এখনও শিপের মধ্যে আছি। আমরা সবাই চাচ্ছি এখান থেকে বের হতে। আপনারা প্লিজ আমাদের কোনো একটি উপায়ে বের করুন। আমরা এখানে থাকতে চাচ্ছি না।
এদিকে, জাহাজটিকে হামলার জন্য ইউক্রেনকেই দায়ী করেছে রাশিয়া। বাংলাদেশের ওই জাহাজে কোন দেশ হামলা চালিয়েছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এসজেড/
Leave a reply