অমর একুশে বইমেলায় দেখা মেলে নানা গল্প আর চরিত্রের। এমনই এক চরিত্রের নাম কোহিনূর আক্তার জুইঁ, যিনি চোখে দেখতে না পারলেও লেখালেখির অদম্য ইচ্ছে থেকে হয়েছেন একজন লেখক এবং প্রকাশক। প্রতিদিন বইমেলা জুড়ে নিজের বই ফেরি করেন তিনি।
কোহিনূর আক্তার জুইঁয়ের লেখনী প্রকাশ করেনি কেউ। তাই নিজেই প্রকাশক বনে গিয়েছেন তিনি। কোনো প্রকাশনী তার বই স্টলেও রাখতে রাজি হয়নি। দৃষ্টিশক্তির সীমাবদ্ধতাকে কীভাবে অতিক্রম করলেন এই লেখিকা, সে প্রসঙ্গে কোহিনূর আক্তার জুইঁ বলেন, আমি মুখে বলি আর একজন কেবল লিখে দেয়। এরপর আমি বই ছাপাই। অনেক প্রকাশকের কাছেই গিয়েছি। বলেছি, আমার বইটা স্টলে রেখে যেন বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়। বই বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থের একটা অংশ স্টল মালিক রেখে একটা অংশ তাকে দিলেই হবে, তার এমন প্রস্তাবও রাখেনি বইমেলার কোনো প্রকাশনী। তারা জানিয়েছে, নিজ প্রকাশনী ছাড়া বাইরের বই তারা রাখেন না।
সাভার থেকে প্রতিদিন শত বাধা ডিঙিয়ে কোহিনূর পাঠকের কাছে পৌঁছান বইমেলায়। তিনি জানান, সাভার থেকে নীলক্ষেত এসে বাস থেকে নামেন তিনি। তারপর রিকসায় করে পৌঁছান বইমেলায়। মিরপুর ও নীলক্ষেতের প্রেস থেকে বই ছাপিয়েছেন তিনি।
মাস্টার্স পর্যন্ত পড়াশোনাটা শেষ করে কোহিনূর নিজের লেখালেখির অদম্য ইচ্ছাটা বাঁচিয়ে রেখেছেন। তার খাতায় একটাই চাওয়া, পাঠক যেন একটি হলেও বই কেনে এবং পড়ে। তিনি বলেন, বেশীরভাগ মানুষই বইমেলায় ঘুরতে আসে, দেখতে আসে; কিন্তু বই কিনতে আসে না। বই কিনতে বললে বেশিরভাগই বলে, টাকা নেই বা, আজ টাকা নিয়ে আসিনি। তাই আমার মনে হয়, আসার সময় একটি ছোট বই কিনতে পারার মতো সামর্থ্য নিয়েই আসা উচিত। পাঠকদের প্রতি এটাই আমার প্রত্যাশা।
এম ই/
Leave a reply