রুশ অভিযানে বিপর্যস্ত ইউক্রেনের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। এতে সবচেয়ে করুণ দশা ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের। নিয়মিত চিকিৎসা ও ওষুধপত্রের অভাবে অবনতি হচ্ছে তাদের শারীরিক অবস্থার। এমন পরিস্থিতিতে সন্তানের জীবন বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়ে সীমান্তবর্তী লাভিভ শহরে ছুটছেন অনেক বাবা-মা।
ক্রিস্টিনা চিকালো নামে সতেরো বছর বয়সী ক্যান্সার আক্রান্ত এক কিশোরীর চিকিৎসা চলছে কয়েক মাস ধরে। তবে এতে বাধ সাধে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযান। ওষুধ আর নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভাবে রীতিমত মুমূর্ষু তার শারীরিক অবস্থা।
ক্রিস্টিনার মত করুণ দশা ইউক্রেনের হাজারো ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুর। বিধ্বস্ত শহরগুলোতে বন্ধ চিকিৎসা সেবা। মিলছে না প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রও। এমন পরিস্থিতিতে পোল্যান্ড সীমান্তের কাছাকাছি লাভিভ শহরে সন্তানদের নিয়ে ছুটছেন বাবা-মায়েরা। প্রত্যাশা- সেখানে হয়ত মিলবে প্রাণপ্রিয় সন্তানের চিকিৎসা।
ওরেস্ট লেসনেভিস্কি নামে ইউক্রেনের এক শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, কিয়েভ, খারকিভ ও দক্ষিণাঞ্চল থেকেও শিশুদের নিয়ে আসছে আমাদের শহরে। হাসপাতালের ধারণক্ষমতার প্রায় ৯০ শতাংশ পূর্ণ হয়ে গেছে।
রুশ বাহিনীর হামলার মধ্যেই সন্তানদের নিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছেন অনেকে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাজারো বিপত্তি পার করছেন তারা।
লেসনেভিস্কি আরও বলেন- ক্রমাগত বোমা হামলা, গুলি বর্ষণের মাঝে তাদের নিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছেন বাবা-মায়েরা। সাধারণ সময়ে কিয়েভ থেকে লাভিভ চার-পাঁচ ঘণ্টার রাস্তা। এখন সে রাস্তা পাড়ি দিতেই ১৮ ঘণ্টা থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগছে।
একে রোগীর বাড়তি চাপ, তার ওপর চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব; সব মিলিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন লাভিভের বিশেষায়িত হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি সেবা নিশ্চিতে পুলিশের সহায়তায় রোগীদের পাঠানো হচ্ছে পোল্যান্ডে।
লেসনেভিস্কি জানান, কিছু রোগীর এমন অবস্থা যে তাদের আর অপেক্ষা করানো সম্ভব না। এই মুহূর্তে অস্ত্রপচার বা কেমোথেরাপি দিতে হবে। কিন্তু এখন মেডিকেল সরঞ্জামের ভীষণ সংকট। সব কিছু যোগাড় করাও সম্ভব হচ্ছে না। যাদের অবস্থা বেশি সংকটজনক তাদেরকে পোল্যান্ডের দিকে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
রাশিয়ার হামলায় ধ্বংসস্তূপের নগরীতে পরিণত হয়েছে ইউক্রেন। সামরিক স্থাপনায় হামলার কথা বললেও ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমনকি হাসপাতালেও চলছে রুশ বাহিনীর গোলাবর্ষণ। তাই ভেঙ্গে পড়েছে দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।
জেডআই/
Leave a reply