অবৈধভাবে মাটি কাটা চক্রের বিরুদ্ধে মধ্যরাতে নিজাম হাজারীর অ্যাকশন, ৪টি ট্রাক জব্দ

|

আগুনে পুড়ে যাওয়া স্কেভেটর ও অবৈধভাবে মাটি কাটার পরে মুহুরী নদীর চিত্র

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ফেনী:

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার ঘনিয়ামোড়া গ্রামের মুহুরী নদীর পাড় থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাটি তুলছিল স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের লোকজন। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) রাত ২টায় সেখানেই অভিযান চালান ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী। এমপির অভিযানের খবর পেয়ে স্থানীয়রা মাটি কাটা অবস্থায় দুটি স্কেভেটরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় মাটি বহনকারী দুটি ট্রাক জব্দ করে ফুলগাজী থানা পুলিশ।

বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছেন ফুলগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মঈন উদ্দিন। তিনি জানান, এমপির অভিযানের খবরে স্থানীয়রা স্কেভেটরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় পুলিশ ৪টি ট্রাক জব্দ করে। তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। গাড়িগুলো কার সেটি খোঁজ নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, মুহুরী নদী সোজাকরণের দাবি তুলে ফুলগাজীর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল আলীম ও ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সেলিম জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করে মাটি কাটা শুরু করেন। কিন্তু জেলা প্রশাসক এই বিষয়ে কোনো অনুমতি দেননি। ইতোমধ্যে কোটি টাকার মাটি বিক্রি করে ফেলেছে এ চক্র।

স্থানীয়রা জানান, মাটি কাটার কারণে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ আরও বেশি হুমকির মুখে পড়বে।

এর আগে, সোমবার (১৪ মার্চ) জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ইউপি সেবা, ফেনী’ আ্যাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফেনী-২ আসনের সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী জেলার সকল জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ফসলি জমির মাটি ও অবৈধভাবে কাটা বন্ধ করতে। যদি কোনো ইউনিয়ন চেয়ারম্যানও মাটি কাটার সাথে যুক্ত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার
জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন তিনি। নিজাম হাজারীর এমন ঘোষণার পরও মাটি কাটা বন্ধ করেনি এই চক্রটি।

জানা গেছে, জেলার সর্বত্রই এভাবে সমান তালে মাটি কেটে চলেছে বিভিন্ন চক্র। ফলে, বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) রাতে নিজাম হাজারী অভিযানে নামেন।

জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান বলেন, মুহুরী নদীর পাড় থেকে মাটি কাটার জন্য কাউকে অনুমতি দেয়া হয়নি। শুনেছি অনুমুতি ছাড়াই কেউ কেউ নদী থেকে মাটি কাটছে। আমরা এর আগে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছি।

ফেনীর ধলিয়া ইউনিয়নের অলিপুর গ্রামের বাসিন্দা শাহ আলম বলেন, নিজাম হাজারীর অ্যাকশন দেখে আমরা খুশি হয়েছি। এ ধরনের অভিযানে আমরা সাহস পেয়েছি। মাটিখেকোদের দৌরাত্ম এত বেশী ছিল যে আমরা অসহায় ছিলাম। এভাবে নিজাম হাজারী অভিযান অব্যাহত রাখলে আর কেউ মাটি কাটার সাহস পাবে না।

সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেন, টপ সয়েলের মাটি কাটার কারণে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যদি জমির উপরিভাগের মাটি কাটা হয় তাহলে আগামী একশ বছরেও ওই জমিতে আর ভাল ফলন হবে না। কৃষক এবং জমি রক্ষায় আমার অভিযান অব্যাহত থাকবে।

জিজ্ঞেস করা হলে ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল আলীম বলেন, আমি মাটি কাটার সাথে সম্পৃক্ত নই।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply