কুপ্রস্তাবে কিশোরীর আত্মহত্যা; আধা ডজন মামলাধারী বখাটে গ্রেফতার

|

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:

চুয়াডাঙ্গায় মাদ্রাসাছাত্রী মাসুমা খাতুনকে (১৮) আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার আসামি আবুল কালাম (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সকালে জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সিগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে কালামকে গ্রেফতার করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ। পুলিশ জানায়, ২০২০ সালে ছাত্রলীগ নেতা জোবায়ের রিগান ও তার মামা কৃষক লীগ নেতা মহসীন রেজাকে কুপিয়ে জখম করে কালাম। দা নিয়ে কোপানোর জন্য তাকে এলাকায় দা কামাল নামেও ডাকা হয়। তার নামে অন্তত আধা ডজন মামলা রয়েছে বলেও জানায় তারা।

প্রসঙ্গত, গত রোববার চুয়াডাঙ্গায় গলায় ফাঁস দিয়ে মাসুমা খাতুন নামের এক মাদরাসাছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। অভিযোগ উঠেছে, বখাটে কালাম তাকে উত্ত্যক্ত করতো, তাই অপমান সহ্য করতে না পেরেই আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন মাসুমা। এ ঘটনায় রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন মেয়েটির বাবা। মাসুমা স্থানীয় রেলবাজার আলিয়া মাদ্রাসার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি হকপাড়ার চা দোকানি আমিনুল ইসলামের মেয়ে।

নিহতের বাবা আমিনুল ইসলামের অভিযোগ, আবুল কালাম প্রায়ই তার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতো। গত শুক্রবার সকালে রেলস্টেশন সংলগ্ন চায়ের দোকান পরিষ্কার করতে যায় মাসুমা। আমিনুল জানান, সেখানে মাসুমাকে একা পেয়ে কুপ্রস্তাব দেয় কালাম। রাজি না হওয়ায় তাকে মারধরও করে সে। বিষয়টি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে তারা সালিশের কথা বলেন। কিন্তু গত দুই দিনেও হয়নি সেই সালিশ। পরে রোববার বিকেলে বাড়িতে কেউ না থাকায় গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস দেন মাসুমা। পরে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. উৎপলা বিশ্বাস জানান, হাসপাতালে নেয়ার আগেই মারা যায় মাসুমা।

পুলিশ জানায়, মাসুমার বাবার করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বিবাহিত হয়েও কালাম বেশ কিছুদিন ধরে মাসুমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসলেও তাতে রাজি ছিল না মাসুমার পরিবার। পরে কালাম মাসুমাকে তার সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এক পর্যায়ে মাসুমাকে প্রকাশ্যে মারধর ও গালমন্দ করে। অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে মাসুমা। এ নিয়ে যমুনায় প্রকাশিত ‘একা পেয়ে বখাটের কুপ্রস্তাব, মাদরাসা ছাত্রীর আত্মহত্যা‘ শিরোনামের প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আসামি জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। অর্ধ ডজন মামলার আসামি বখাটে কালাম চুয়াডাঙ্গা জেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে কথা বললে সে যখন তখন কোপাতো বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply