এবার শিশিরও হাসপাতালে, অর্জন-উৎকণ্ঠার এক জন্মদিন সাকিবের

|

সপরিবারে সাকিব আল হাসান। ফাইল ছবি।

একদিকে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অর্জন- প্রোটিয়াদের তাদেরই মাটিতে সিরিজ হারানো এবং তাতে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান, অন্যদিকে পরিবারের সবাই অসুস্থ; অর্জন আর উৎকণ্ঠার এক জন্মদিনই এলো সাকিব আল হাসানের জীবনে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদেরই মাটিতে ঘায়েল করার পর টিমমেটরা যখন উল্লাসে মত্ত, তখন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার ব্যাগ গুছিয়ে দেশের পথ ধরেছেন। বুধবার (২৪ মার্চ) ৩৫-তম জন্মদিনটা এক মিশ্র অনুভূতি হয়ে ধরা দিলো সাকিব আল হাসানের কাছে।

জন্মদিন কেমন কাটছে সাকিবের? কম কথায় উত্তর দিয়ে দেয়া যায়, মায়ের অসুস্থতা তীব্র হওয়ার দুঃসংবাদ শুনে মাঠে নেমে অর্জনের দারুণ এক সুখস্মৃতি, অতঃপর একঘেঁয়ে ভ্রমণের ক্লান্তি, সেটি কাটতে না কাটতেই হাসপাতালে পরিবারের কাছে ছুটে যাওয়া। তাতে যদি উৎকণ্ঠা কিছুটা লাঘব হয়। এখানেও মিশ্র এক অনুভূতির মাঝে পড়েছেন সাকিব। এবার অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তার স্ত্রী উম্মে হাসান শিশিরও। স্বভাবতই বাড়তি উৎকণ্ঠা যোগ হলো সাকিবের। তবে আগে থেকে হাসপাতালে ভর্তি থাকা মা ও সন্তানদের শারীরিক অবস্থা ভালোর দিকে। এটি হয়তো তাকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে থাকবে।

বাঁহাতি অলরাউন্ডার সাকিবের মা শিরিন আক্তার আগে থেকেই হার্টের সমস‍্যায় ভুগছিলেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কিছু দিন আগে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সাকিবের তিন সন্তানও এই হাসপাতালে ৷ একমাত্র ছেলে আইজাহ আল হাসান ও মেঝো মেয়ে ইরাম হাসান নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। বড় মেয়ে আলাইনা হাসানের তেমন সমস্যা না থাকলেও ঠাণ্ডা জ্বর ছিল। অন্যদিকে, ক্যান্সার আক্রান্ত সাকিবের শাশুড়ির চিকিৎসা চলছে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। 

অবশ্য, এমন পরিস্থিতি যে কারও চেয়ে ভালো সামাল দিতে পারবেন সাকিব তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রায় ১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে বারবার চাপ নেওয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। দেশের মানুষকে হাসিয়েছেন অসংখ্যবার, আবার এশিয়া কাপের ফাইনালে ২ রানের আক্ষেপে পোড়া কান্নায় সহযাত্রী হিসেবেও পেয়েছেন লাখো মানুষকে।

১৯৮৭ সালে মাগুরায় জন্ম নেয়া সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ২০০৬ সালের আগস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে। কয়েকমাস পর একই দলের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় তার। পরের বছর ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ক্যাপ মাথায় পরেন। এরপর নানা উত্থান-পতন দেখেছেন সাকিব। কিন্তু পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা দিয়ে জয় করেছেন সবকিছু। তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রান এবং ৫০০ উইকেট; আর একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ১২ হাজার রান ও ৬০০ উইকেটের ক্লাবে আছেন সাকিব। ওয়ানডে অলরাউন্ডার রাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটি একপ্রকার দখলেই নিয়ে নিয়েছেন। অন্যান্য সংস্করণেও তার সমান দাপট। খেলেছেন সারা বিশ্বের প্রায় সব ফ্র্যাঞ্জাইজি লিগে। বাংলাদেশি হিসেবে অনেকগুলো ক্ষেত্রে অনন্য সাকিব। পোস্টার তো অনেকেরই হয়- বাংলার দেয়ালে, তারে কিংবা সাইনবোর্ডে পোস্টারের অভাব নেই; কিন্তু ‘পোস্টারবয়’ শব্দটি শুনলে বাংলাদেশের মানুষের মানসপটে ভেসে উঠে একটিই নাম- সাকিব আল হাসান। শুভ জন্মদিন- ‘মিস্টার টেম্পারমেন্ট’।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply