পাঁচ বছর আগে এমনই একটা ছবি নাড়িয়ে দিয়েছিল ভারতবাসীকে। স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে হেঁটে চলেছেন ওডিশার কালাহান্ডির বাসিন্দা দানা মাজি। পাশে হাঁটছে তার ১২ বছরের মেয়ে চাঁদনি। হতদরিদ্র আদিবাসী দানা লাশবাহী গাড়ির টাকা জোগাড় করতে না পারায় স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে ফেলে ১২ কিলোমিটার হেঁটে যাওয়ার ভিডিও দেখে ২০১৭ সালে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল ভারতে।
এবার তেমনই এক দৃশ্য দেখা গেছে ছত্তীসগঢ়ের সরগুজায়। লাশবাহী গাড়ি না পেয়ে মৃত কন্যার লাশ নিয়ে ১০ কিলোমিটার হাঁটলেন ইশ্বর দাস।
সংবাদ সংস্থা এএনআই প্রকাশিত ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়তেই সক্রিয় হয়েছে ছত্তীসগঢ় সরকার। সে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী টি এস সিংহদেও ঘটনার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
আনন্দবাজার পত্রিকা স্থানীয় সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, আমডালা গ্রামের বাসিন্দা ঈশ্বর তার সাত বছরের মেয়ে সুরেখাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শুক্রবার ভোরে লক্ষ্মণপুরের সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। কিছু সময় পরে সেখানেই সুরেখা মারা যায়। মেয়ের দেহ গ্রামে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও গাড়ি পাননি ঈশ্বর। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পরে তিনি কাঁধে মেয়ের দেহ তুলে ১০ কিলোমিটার দূরে আমডালার উদ্দেশে রওনা হন।
লক্ষ্মণপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক বিনোদ ভার্গব শনিবার বলেন, ‘‘মেয়েটির অক্সিজেনের মাত্রা খুব কমে গিয়েছিল। ৬০ এর কাছাকাছি নেমে যায়। তার বাবা-মা জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন ধরে সে প্রবল জ্বরে ভুগছিল। আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করেছিলাম। কিন্তু তার অবস্থার অবনতি হয়। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ সে মারা যায়।’’ ভার্গবের দাবি, সুরেখার লাশ নিয়ে যাওয়ার জন্য সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লক্ষ্মণপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সরকারি গাড়ি এসেছিল। কিন্তু তার আগেই ঈশ্বর মেয়ের লাশ কাঁধে তুলে গ্রামের উদ্দেশে রওনা হন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিংহদেও সরগুজা জেলারই অম্বিকাপুরের বিধায়ক। ঘটনা সম্পর্কে দুঃখপ্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘আমি ভিডিওটি দেখেছি। খুবই মর্মান্তিক। এ বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের উচিত ছিল গাড়ি না আসা পর্যন্ত মৃতের পরিবারকে অপেক্ষা করতে বলা। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
আরও পড়ুন- ছেঁড়া জিন্স পরে যাওয়া যাবে না! কলকাতার কলেজে নতুন নিয়ম
এনবি/
Leave a reply