জ্বালানি সংকটের আগাম সতর্কতা জানিয়ে অপচয় বন্ধের আহ্বান জার্মান সরকারের

|

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই অস্থিতিশীল ইউরোপের জ্বালানি খাত। তেল-গ্যাস আমদানিতে রুবলে মূল্য পরিশোধে মস্কোর সিদ্ধান্তে এই সংকট আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার শঙ্কা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ)। এরইমধ্যে ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে বেড়েছে জ্বালানির দাম। দেশটি জ্বালানি খাতে রাশিয়ার ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল।

রাশিয়ান রুবলের মাধ্যমে তেল-গ্যাসের মূল্য পরিশোধ নিয়ে পুতিন প্রশাসনের সঙ্গে জর্মানির দরকষাকষি চলছে। এ অবস্থায় আমদানি বন্ধ হলে সংকট আরও দীর্ঘ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। জ্বালানি সংকটের আগাম সতর্কতা জানিয়ে অপচয় বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে জার্মান সরকার। খবর আল জাজিরার।

জার্মানির অর্থমন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক বলেন, রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি বন্ধ হলে তীব্র জ্বালানি সংকট তৈরি হবে। আসন্ন পরিস্থিতির জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হতে হবে। কোম্পানি ও ব্যক্তি পর্যায়ে সবাইকে জ্বালানির অপচয় রোধ করতে হবে।

এ যেন মস্কোর ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা বুমেরাং হয়ে আঘাত হানছে পশ্চিমাদের ওপর। গোটা অঞ্চলে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাবের শঙ্কা বিশ্লেষকদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমদানি বন্ধ হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে জার্মানির উৎপাদন খাত। এতে মূল্যস্ফীতিসহ অর্থনীতি ও জনগণের জীবনযাত্রায় ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাবের শঙ্কা রয়েছে।

জার্মান অর্থনীতিবিদ অচিম ট্রুগার বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের ফলে জ্বালানীর বিশ্বব্যাপী সাপ্লাই চেইন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গ্যাস ও তেলের দাম বাড়ার ফলে কোম্পানিও ক্ষতির মুখে পড়ছে। সব মিলিয়ে চরম মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই জার্মান সরকারের উচিত এখনও রাশিয়ার বিকল্প কিছু চিন্তা করা।

শুধু জার্মানি না, জ্বালানি খাতে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল গোটা ইউরোপ। পরিসংখ্যান বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পেট্রোলিয়াম আমদানির এক চতুর্থাংশ ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ৪০ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে। তাই নির্ভরশীলতার জায়গা থেকে বেরিয়ে আসা ইইউ’র জন্য সহজ নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

স্পেনের অর্থনীতি বিষয়ক গবেষক মারি ভ্যান্ডেনড্রিচে জানান, রাশিয়া থেকে আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করা ইউরোপের জন্য এতটা সহজ নয়। ২০৩০ সাল নাগাদ রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি পুরোপুরি বন্ধের কথা বলছে তারা। তবে এটা অনেকখানি নির্ভর করবে, নতুন সরবরাহকারীদের সঙ্গে কত দ্রুত কত ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবে তার ওপর।

শুধু জ্বালানিই নয়, যুদ্ধের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে অন্যান্য দ্রব্যের ওপরও। বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম। যা ইউরোপে গেলো ২৫ বছরের মধ্যে রেকর্ড।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply