‘এখন খাবার কিনতে পারবো, তবু রুটি লুকিয়ে রাখছে আমার ছেলে’

|

নাদিয়ার আশা, যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে তার সন্তানরা। ছবি: সংগৃহীত

মারিওপোলে আটকে থাকার পর নিরাপদে লিভিভে পৌঁছুতে পারা নারী নাদিয়া দেনিশেঙ্কো বলেন, যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে আমার সন্তানরা কিছুতেই বেরুতে পারছে না। এখন আমাদের খাবার কেনার মতো অবস্থা থাকলেও রুটি লুকিয়ে রাখছে আমার ছেলে, যাতে পরের দিন খাবারের অভাব না হয়। প্রতিবেদনটি এসেছে বিবিসিতে।

রুশ আগ্রাসনে বিধ্বস্ত শহর মারিওপোলে এখনও প্রায় হাজার দশেক ইউক্রেনীয় আটকা পড়ে আছেন। তাদের কাছে নেই খাদ্য ও পানীয়। বিদ্যুৎ ও গ্যাস ছাড়া এই বিশাল সংখ্যক মানুষের জীবন কাটছে মানবেতর অবস্থায়। মানব করিডোরের মাধ্যমে সাহায্য পৌঁছে দেয়া এবং আটকে থাকা ইউক্রেনীয়দের উদ্ধারের বেশ কিছু প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। আর যারা কোনোমতে পালাতে পেরেছেন, তারাও যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে খুব বেশি দূরে যেতে পারেননি।

পালিয়ে যাওয়া ইউক্রেনীয়রা প্রথমেই কিনছেন রুটি, সসেজ, পানীয়র মতো জরুরি দ্রব্যসমূহ। ক্রমাগত গুলি ও বোমাবর্ষণের মাঝেই মারিওপোলে তিন সপ্তাহ আটকে থাকার পর নাদিয়া দেনিশেঙ্কো তার শিশুদের নিয়ে পালাতে পেরেছেন। নাদিয়া বলেন, বোতলজাত পানি পেয়ে খুব খুশি আমরা। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পুরো বোতল শেষ করে ফেলেছি। ১৪ এবং ৫ বছর বয়সী দুই ছেলে ও ১২ বছরের মেয়েকে নিয়ে খাদ্য ও পানীয়র অভাবে দিন কাটানোর পর পালিয়ে এসে নাদিয়া বলেন, যুদ্ধের শুরুতে আমার ছোট ছেলে বলেছিল, রুটি খেতে পারলে ভালো লাগতো।

জাপোরঝিয়া থেকে পাঁচদিন ভ্রমণ করে লিভিভে পৌঁছে নাদিয়া বলেন, এখন আমরা নিরাপদ। খাবারও কিনতে পারছি। কিন্তু আমার ছেলে এখনও রুটি, মোমবাতি লুকিয়ে রাখছে। আমরা যে অ্যাপার্টমেন্টে আছি সেটারই বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রাখছে এসব জিনিস। এর কারণ জিজ্ঞেস করলে বলে, আগামীকালও যেন খাওয়ার কিছু থাকে সেজন্যই এসব করছি। তবে আমি এখনও বুঝতে পারছি না কেন এমনটা হলো। আমাদের শহর ছিল একদম ঠিকঠাক। দারুণভাবে গড়ে উঠছিল মারিওপোল। আর এখন স্রেফ নরকে পরিণত হয়েছে। ঘুমোনোর সময় আমরা জানি না, জীবিত অবস্থায় ঘুম থেকে উঠতে পারবো কিনা।

আরও পড়ুন: বুচায় আবিষ্কৃত গণকবর, ৪১০টি লাশ পাওয়া গেছে বলে দাবি

এম ই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply