কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রাম সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে বন্দি ৬ ভারতীয় নাগরিকের সাজার মেয়াদ শেষ হলেও জেলখানা থেকে মুক্তি মেলেনি তাদের। এ ৬ জন বাদে আরও একজন ভারতীয় সাজার মেয়াদ খাটছেন। দু’দেশের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উদ্যোগ না থাকায় সাজা শেষেও ৬ ভারতীয় নাগরিককে টানতে হচ্ছে জেলের ঘানি।
কুড়িগ্রাম জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এস এম আব্রাহাম লিংকন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অবৈধ অনুপ্রবেশকারী এসব ভারতীয় বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর বিচারের মুখোমুখি হয়। বিজ্ঞ আদালত তাদের বিভিন্ন মেয়াদের সাজা প্রদান করেন। ইতোমধ্যে ৬ জনের সাজার মেয়াদ শেষ হলেও বিদেশি নাগরিক হওয়ায় আসামি হস্তান্তরের জটিলতায় মুক্তি পাননি তারা।
আদালত ও অনুসন্ধান সূত্রে জানা যায়, রৌমারী সীমান্ত দিয়ে ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর ৩ জন ভারতীয় নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন। এরা হলেন, ভারতের ধুবরী জেলার মাইনকারচরহাট সিংগীমারী এলাকার জলিল মিয়া ওরফে সমেজ, একই জেলার শাহ আলম শেখ ওরফে শাহালম এবং জাহাঙ্গীর আলম।
একই সীমান্ত দিয়ে ২০২১ সালের ১৬মার্চ গ্রেফতার হন ধুবরী জেলার কানাইমারা গ্রামের নুরুজ্জামান। এছাড়াও ২০২১ সালের ২ এপ্রিল গ্রেফতার হন ধুবরী জেলার দক্ষিণ শালমারা’র দ্বীপচর গ্রামের গোলজার হোসেন ও তৈয়ব আলী। এদের বিরুদ্ধে জিআর (মামলা নং-২১১/২০, রৌ.) ও ১৯৫২ সালের দ্য কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্টের ৪ নং ধারার অভিযোগ আনা হয়। যা পাসপোর্ট ও ভিসা ব্যতিরেখে অনুপ্রবেশ করার অপরাধ।
কুড়িগ্রাম চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (৪র্থ) আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেন। ইতোমধ্যে তাদের সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও মুক্তিপ্রাপ্তদের হস্তান্তর জটিলতার কারণে তাদেরকে বিনা অপরাধে কারাভোগ করতে হচ্ছে।
অপরদিকে, উলিপুর সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও মাদক মামলায় ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর গ্রেফতার হন ভারতের ধুবরী জেলার সুখচর নীলাক্ষিরা পাটুয়া গ্রামের হারেছ আলী বাবু। তার সাজার মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের
১ নভেম্বর। দণ্ডভোগ শেষে তারও বাড়ি ফেরা হবে কী না এ নিয়ে সংশয় রয়েছে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন জানান, দুদেশের পররাষ্ট্র্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার দ্রুত সমাধান হতে পারে। তাদের মুক্তি পাওয়া একটি মানবিক অধিকার। এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অধিকার কোন রাষ্ট্রের নেই।
কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারের জেলার মো. ইসমাঈল হোসেন জটিলতার কথা স্বীকার করে জানান, বিষয়গুলো সময় মতো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়া গেছে। সে মোতাবেক বিজিবি’র রংপুর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডারকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও অনুমোদন মেলেনি ভারতীয় হাই কমিশনের। তারা তথ্য যাচাই বাছাই করছেন বলে জানা গেছে। কাজেই ভারতীয় পক্ষের ক্লিয়ারেন্স পেলে আমরা পুলিশ ও বিজিবির সহায়তায় লালমনিরহাট বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে হস্তান্তর করতে পারবো।
/এসএইচ
Leave a reply