নাইজেরিয়ার কাদুনায় সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের ১৬৮ জনের এখনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, নিখোঁজদের মধ্যে কতজনকে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করা হয়েছে কিংবা কতজন বাড়ি ফিরেছেন তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি তারা। খবর বিবিসির।
গত সোমবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় দেশটির রাজধানী আবুজা থেকে উত্তর নাইজেরিয়ান শহর কাদুনাগামী একটি যাত্রীবাহী ট্রেনকে অবরোধ করে হামলা চালিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। এই ভয়াবহ হামলায় অন্তত আটজন নিহত হন। এ হামলায় কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এখনো দায় স্বীকার করেনি।
এই হামলা থেকে বেচে যাওয়া এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার অভিজ্ঞতার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমি খুশি যে, এখনো সুস্থভাবে বেঁচে আছি। কিন্তু যারা মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন। আমিও তাদের মতো হতে শিকার হতে পারতাম।’
কিন্তু হামলার শিকার থেকে বেচে যাওয়া এই ব্যক্তির ১৭ নম্বর কোচে বসে ছিলেন। কিন্তু তিনি ১২ নম্বর কোচে সরে আসেন। হামলাকারীরা ১৭ নম্বর কোচেই হামলা চালায়।
হামলার সময়ের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যা ৭ টা ৪৫ মিনিটের দিকে আমরা একটা বড় বিস্ফোরণের শব্দ শুনলাম। এবং হঠাৎ করে ট্রেনটি থেমে গেল।’ এরপরই আক্রমণকারীরা চারদিক থেকে ঘিরে ধরে, বিভিন্ন দিক থেকে গুলি ছুড়ছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি তখন আমার পরিবারকে একত্রিত করে ট্রেনের মেঝেতে শুয়ে পড়ি। আমি দেখলাম সেখানে অন্যরাও তেমনিটি করছিল।’
‘কিছু সময় পর আমি বুঝতে পারি বন্দুকধারীরা ক্ষিপ্র হয়ে উঠেছেন। কেননা তাদের চিৎকার শোনা যাচ্ছিল। কয়েকটি গুলির শব্দও আমি শুনতে পাই।’ বলেন ওই ভুক্তভোগী।
হামলা থেকে বেচে যাওয়া ওই ব্যক্তি আরও জানান, সন্ত্রাসীরা ওই কোচ থেকে সবাইকে বাইরে বের করে ঝোপের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সাথে তাদের কোচ কেউ আসেনি বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, আক্রান্ত হওয়া ট্রেনে প্রায় ১৮ জন পুলিশ সদস্য ছিলেন। কিন্তু তাদের কাছে অস্ত্র বা গোলাবারুদ ছিল না।
এদিকে ভয়াবহ এই ঘটনার পর নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপতি মুহাম্মদু বুহারিকে দেশটির পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির বিরোধী রাজনীতিবিদ কাসিম আফেগবুয়া পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। ঘটনাটি নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ ও কর্মকান্ড দেখে তিনি নিজেকে ‘অত্যন্ত লজ্জিত’ বলে উল্লেখ করেছেন।
Leave a reply