স্বামী-ঘর-সংসার হারালাম; সর্বহারা অবস্থা আমার: রাবি শিক্ষক তাহেরের স্ত্রী

|

‘স্বামী হারালাম, ঘর-সংসার হারালাম, সবকিছু হারালাম। একদম শেষ আমি। জীবনের শেষ সীমানায় পৌঁছে গেছি। সর্বহারা যাকে বলে না, সে অবস্থা আমার।’ বলছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ এর স্ত্রী সুলতানা আহমেদ।

গতকাল মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় তার সহকর্মী ড. মিয়া মো. মহিউদ্দিন এবং বাসার তত্ত্বাবধায়ক মো. জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে আপিল বিভাগ। গণমাধ্যমে রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সুলতানা আহমেদ এসব কথা বলেন।

রায়ে খুশি হয়েছেন, তবে কার্যকর হলে পরিপূর্ণভাবে খুশি হবেন উল্লেখ করে তাহেরের স্ত্রী বলেন, ১৬ বছর তো অনেক সংগ্রাম করলাম। কী বলবো, আমি তো একেবারে শেষ হয়ে গেছি। এখন বলার আর কী থাকতে পারে। রাজশাহী থেকে কিছু তো আনতে পারি নাই। সব জিনিসপত্র ওখানেই পড়ে আছে। ১৬ বছরে সেগুলো ঠিক থাকার কথা নয়। ছেলে ছিল বলে তখন বেঁচে গেছি। ছেলে ঢাকায় চাকরি করতো। তখন চাকরিতে তার প্রাথমিক অবস্থা ছিল। সংসারটা পুরো চালাতো সে। মামলাও দেখতো।

রায়ের পর আদালত প্রাঙ্গণে তাহেরর স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে। ছবি: সংগৃহীত।

রায়ের প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় মায়ের সঙ্গে ছিলেন তাহেরের ছেলে সানজিদ আলভী আহমেদ ও মেয়ে অ্যাডভোকেট সেগুফতা আহমেদ।

এ সময় সানজিদ আলভী আহমেদ বলেন, রায়ে সন্তুষ্ট, ন্যায় বিচার হয়েছে। মামলার সংশ্লিষ্ট আইনজীবী ও পুলিশ কর্মকর্তা এবং সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি। গণমাধ্যমের কাছে কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন তাহেরের পুত্র। বলেন, পরিবার হিসেবে আমরা সাধারণ পরিবার। তাই সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।

অন্যদিকে সেগুফতা আহমেদ বলেন, একটু হলেও স্বান্তনা হবে রায়টা যখন কার্যকর হবে। তিনিও সরকার, আইনজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তহের কন্যা এও জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে নিম্ন আদালত পর্যন্ত মামলার বিষয়ে দেখভাল করেছেন তার ভাই। আর উচ্চ আদালতে তিনিই মামলা সংক্রান্ত কাজটি দেখাশোনা করেছেন।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাতে অধ্যাপক তাহের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায় নিজ বাসা থেকে নিখোঁজ হন। পরে ৩ ফেব্রুয়ারি সকালে নিজ বাসার পেছনের সেপটিক ট্যাংক থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply