মনে করুন, আপনি দূরের কোনো পথ চলছেন গাড়িতে। চলতে চলতে সামনেই নদী পড়লে আপনার মনে হতে পারে, আহারে গাড়িটা যদি নৌকা হয়ে যেত! অথবা যদি নদীতেও চলত গাড়িটা। অনেকের মনের ভাবনা শুধু মনে থাকলেও তা বাস্তবে পরিণত করেছেন যুক্তরাজ্যে বসবাস করা এক বাবা ও তার ছেলে।
করোনার লকডাউনে ঘরে বসে না থেকে এই স্বপ্নকে হাতের মুঠোয় এনেছেন ঐ বাবা-ছেলে। আস্ত ফোর্ড ফিয়েস্টা গাড়িকে উভচর বানিয়ে ফেলেছেন তারা। রাস্তায় চলার সাথে সাথে পানিতেও চালাচ্ছেন তাদের গাড়িকে। সম্প্রতি তাদের গাড়ির একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, একটি সেভেন্থ জেনারেশন ফোর্ড ফিয়েস্টা গাড়িকে নতুন লুকে পরিণত করেছেন বাবা-ছেলে। একটি নৌকা পানিতে চলতে যা যা প্রয়োজন তার সবই এতে স্বার্থক সংযোজন করা হয়েছে।
গাড়িটির উপরের অংশের ডিজাইনে তেমন কোন পরিবর্তন আনা হয়নি। সেভেন্থ জেনারেশন ফোর্ড ফিয়েস্টা গাড়ি আদতে দেখতে যেমন হয়, উপরের অংশ সেই রকমই আছে। তবে পানিতে চলতে ভিন্নতা আনা হয়েছে গাড়ির নিচের অংশে। গাড়ির নিচের অংশের সামনের দিকটা দেখতে অনেকটা নৌকার মতো। যা তৈরি করা হয়েছে ফাইবার গ্লাস দিয়ে। আর টায়ারটা রয়েছে স্টক ফিয়েস্টা অ্যালয়েরই।
গাড়ির ডিজাইনে সাথে সাথে প্রযুক্তিগতভাবেও কিছু নতুন ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। গাড়িটির আগের থেকে পরিবর্তন হয়ে ইঞ্জিনের অবস্থান, স্থাপন করা হয়েছে পিছনের অংশে। আর ধোঁয়া বের করতে চোঙটি তুলে আনা হয়েছে উপরের দিকে। যাতে পানিতে চলার সময় কোনো সমস্যা না হয়। অন্যদিকে হুইলবেসের আয়তন বাড়িয়ে মাঝে বসানো হয়েছে একটা ইঞ্জিন। আর সৌন্দর্য বেড়ে গেছে গাড়ির ছাদ খুলে নেওয়ায়। যার ফলে চলতে চলতে আকাশ, প্রকৃতি দেখা কিংবা ফুরফুরে বাতাস পাওয়া হয়েছে আরও সহজ।
পানিতে চলতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে এর মধ্যে সংযোজন করা হয়েছে প্রপেলার। যাতে একটি ট্রান্সফার কেসের সাহায্যে সহজেই এই প্রপেলারের মধ্যে শক্তি সঞ্চারিত হয়। যার মাধ্যমে পানিতে ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম গাড়িটি। আর প্রপেলার নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে প্যাডেল। এছাড়া রাস্তায় চলার মতোই স্টিয়ারিং হুইল ব্যবহার করেই ডানদিক-বামদিকে ঘোরানো যাবে।
অদ্ভুত এই গাড়ির ভিডিও ভাইরাল হলে অনেকেই বাবা-ছেলের জুটিকে প্রশংসা করতে ভুলছেন না। কেউ কেউ আবার তাদের পুরনো গাড়িটিকে এভাবে তৈরি করে দেয়ার আবদার জানাচ্ছেন। তথ্যসূত্র: যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গাড়ি কেনা-বেচার অনলাইন প্লাটফর্ম মোটর ওয়ান ডট কম।
এমইআর/
Leave a reply