সিদ্ধান্ত নেয়ার ৭টি উপায়, যা আপনার জীবন বদলে দেবে

|

ছবি: সংগৃহীত।

প্রাত্যহিক জীবনে মানুষকে নানা ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। হুটহাট সিদ্ধান্ত নিলে তা অনেক সময়ই ভুল হয়ে যায়। অনেকে আবার সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন। এর ফল যে বেশিরভাগ সময় মধুর হয় না তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অথচ সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারলে সেটি জীবন বদলে দিতে পারে।

আসুন জেনে নেয়া যাক সিদ্ধান্ত নেয়ার ৭টি উপায় যা আপনার জীবনকে বদলে দিতে পারে।

১) সিদ্ধান্তের গুরুত্ব উপলব্ধি করুন:
সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আপনাকে বুঝতে হবে যে একটি সিদ্ধান্ত আসলে আপনার জীবনে কতটা প্রভাব ফেলার ক্ষমতা রাখে। ভবিষ্যতে কোনো একটি ঘটনা ঘটার পেছনে কাজ করে আপনার আজকের নেয়া সিদ্ধান্ত। যেমন, যদি আজ আপনি একটি সিগারেট খান, তবে অদূর ভবিষ্যতে আপনি নিজের অজান্তেই সিগারেটের প্রতি আসক্ত হয়ে উঠতে পারেন। কিন্তু যদি আপনি প্রথম সিগারেটটিই না খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কিংবা সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা হলে অন্য কোনো কাজে নিজেকে নিযুক্ত রাখেন, তবে এই অভ্যাস থেকে আপনি মুক্তি পেতে পারেন।

২) আত্মবিশ্বাসের সাথে এগিয়ে যাওয়া:
অনেক সময় আমরা কোনো সিদ্ধান্তের ফলাফল কী হবে তা ভেবে সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। অজানা ভয় কাজ করে মনে। বিশেষ করে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বা সুদূরপ্রসারী কোনো পরিকল্পনার ক্ষেত্রে এমনটি হয়। এতে সময়ও নষ্ট হয়। এসব ক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার সিদ্ধান্ত যদি ভুলও প্রমাণিত হয়, তারপরও আপনি খুব ভালো একজন সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী হয়ে উঠবেন। যা পরবর্তীতে আপনাকে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।

৩) নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকার চেষ্টা করুন:
নিজের নেয়া কোনো যৌক্তিক সিদ্ধান্তে অটল থাকুন এবং তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করুন। যদি আপনি কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে সেটি বাস্তবায়নের চেষ্টা না করে সেখানেই আটকে থাকেন তবে এটি কোনো সিদ্ধান্তই নয়। জীবনকে ইতিবাচকভাবে পরিবর্তন করতে চাইলে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতাকে একটি অভ্যাসে পরিণত করুন। এতে ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্তগুলোর ক্ষেত্রে আপনি আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হবেন।

৪) আপনার সিদ্ধান্তটি অন্যদের জানান:
আপনি যা করতে চান তা অন্যদের জানিয়ে রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের দায়বদ্ধতা তৈরি হবে। যেমন ধরুন, আপনি সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠতে চান, কিন্তু এটি প্রায় অসম্ভব আপনার জন্য। সে ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্তটি আপনি আপনার কাছের বন্ধুদের জানাতে পারেন। যেহেতু সকলেই জানবে আপনি সকাল ৬টায় উঠবেন, তাই একটা নৈতিক বিষয় কাজ করবে আপনার ভেতরে। এর ফলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই সিদ্ধান্তটি কার্যকর করার তাগিদ অনুভব করবেন।

৫) পূর্বের নেয়া সিদ্ধান্তগুলো থেকে শিক্ষা নেয়ার চেষ্টা করা:
সবাইকে জানানোর পর যদি এমন হয় যে আপনি সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করতে পারেননি, তবু হাল ছাড়বেন না। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, আপনি আপনার সিদ্ধান্তটি একটি কার্যকর সিদ্ধান্তে রূপান্তর করতে আগামীকাল থেকে কী কী পদক্ষেপ নিতে পারেন। সিদ্ধান্তটির ভালো ও খারাপ দিকগুলো সম্পর্কে ভাবুন। এরপর সেই সমাধান অনুযায়ী কাজ করা শুরু করুন।

৬) সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রয়োজনে বিকল্প উপায় খুঁজে বের করুন:
একটি সিদ্ধান্ত নেয়া মানে এই নয় যে আপনি অন্য কোনো বিকল্প উপায় নিয়ে চিন্তা করতে পারবেন না। যেমন ধরুন, আপনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে কার্ডিয়ো ব্যায়াম করে আগামী মাসের ভেতর ৫ কেজি ওজন কমাবেন। এ ক্ষেত্রে যদি কোনো সমস্যা হয়, তাহলে আপনি কার্ডিয়োর বদলে অন্য কিছু করে ওজন কমাতে পারেন। যেমন- ডায়েট প্লান পরিবর্তন করেও আপনি আপনার ওজন কমাতে পারবেন। সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়ে একগুয়েমি না করে অন্য কোনো উপায় বের করতে পারেন।

৭) সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রক্রিয়াকে উপভোগ করুন:
উপরের ধাপগুলো সঠিকভাবে পালনের পর অবশেষে আপনি সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রক্রিয়াটি উপভোগ করতে শুরু করবেন। তবে সিদ্ধান্ত নেয়া সব সময় আনন্দদায়ক নাও হতে পারে। কিন্তু আপনি যখন ঘন ঘন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেবেন, তখন আপনার কাছে সিদ্ধান্ত নেয়া একটি মজার খেলায় পরিণত হবে। এটি আপনাকে জীবনের নানা সময়ে নানা রকম সুযোগ এনে দিতে সহায়তা করবে।

এভাবে আপনি আপনার নিজের সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন এবং সিদ্ধান্ত নেয়া আপনার কাছে আগের চেয়ে অনেক বেশি সহজ মনে হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply