ময়মনসিংহে সনাতন ধর্মের এক ছাত্রীকে স্কুলে বোরকা পরতে বাধ্য করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) সুইডেনে অবস্থানরত এক ব্যাক্তির ফেসবুক স্ট্যাটাসের পর শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। ঐ শিক্ষার্থী জানিয়েছে, শখের বসে বান্ধবীদের সাথে ম্যাচিং করে বোরকা বানিয়েছিলো সে। বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে স্কুলের এক নারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। যমুনা টেলিভিশনের অনুসন্ধান বলছে, ধর্মীয় উস্কানিমূলক স্ট্যাটাসের পেছনে আছে বেসরকারি সংস্থা হাঙ্গার প্রজেক্টের এক কর্মকর্তাও।
৭ এপ্রিল দেবদুলাল মুন্না নামের ফেসবুক আইডি থেকে ছবিসহ একটি পোস্ট দেয়া হয়। দীর্ঘ সেই স্ট্যাটাসে বলা হয় ময়মনসিংহে এক সনাতন ধর্মাবলম্বী স্কুলছাত্রীকে বোরকা পরে স্কুলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। এই ইস্যুটি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বেশ আলোচনা চলে কয়েকদিন।
ঘটনার সত্যতা জানতে ময়মনসিংহ সদরের দাপুনিয়া এলাকায় ওই স্কুলছাত্রীর বাবার সাথে কথা হয় যমুনা টেলিভিশনের। তিনি গ্রাম পুলিশ সদস্য। স্পষ্ট করেই জানালেন, তার মেয়েকে কেউ বোরকা পরতে বাধ্য করেনি। বরং বান্ধবীদের সাথে মিলিয়ে নেহাত শখের বশে একই রঙের বোরকা বানিয়েছে সে। বললেন, যে নারী শিক্ষক বিষয়টি ছড়িয়েছে, তিনি নিজেও সনাতন ধর্মাবলম্বী। হয়তো সনাতন হয়েও বোরকা পরায় তার খারাপ লেগেছে, তাই এটা করেছে সে।
বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচারের জন্য দাপুনিয়া কাওয়ালটি ইসলামিয়া হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক গোপা সরকারকে দায়ী করছে ছাত্রীর পরিবারের অন্যান্যরাও। সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ও ছবি ব্যাবহার করে এমন কাণ্ডে জড়িতদের বিচারের দাবি ভুক্তোভোগী ঐ ছাত্রীর। সে জানিয়েছে, যারা তার ছবি দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক, এমনটাই চায় সে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষিকা গোপা সরকার বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ও ছাত্রীর বোরকা পরা ছবি তুলে পাঠান বেসরকারি সংস্থা হাঙ্গার প্রোজেক্টের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী জয়ন্ত করের কাছে। তিনি এসব সরবরাহ করেন নান্দাইল সমূর্ত্ত জাহান মহিলা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক অরবিন্দ পালকে। এরপর সুইডেনে অবস্থানরত দেব দুলাল মুন্নার ফেসবুক আইডি থেকে দেয়া উস্কানিমূলক পোস্ট। জয়ন্ত কর এবং অরবিন্দ পাল দুজনই দাবি করলেন, এ ঘটনায় তাদের নেতিবাচক কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। আর ওই ছাত্রীর ছবি তোলা শিক্ষক গোপা সরকার নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বললেন, ফেসবুকে পোস্ট দেয়া দেব দুলাল মুন্নার বিচার চান তিনি।
ঘটনাটির পর্যবেক্ষণে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহমার উজ্জামান জানালেন, এ বিষয়ে ব্যাবস্থা নিচ্ছেন তারা।
/এডব্লিউ
Leave a reply