আদালতের রায়ে একমাত্র মেয়ে মিশেল আমানি সায়রার অভিভাবকত্ব পেয়েছেন অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন। রায়ের পর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আবেগাপ্লুত বাঁধন। বিবাহবিচ্ছেদের পর কন্যার কার কাছে থাকবে এ নিয়ে স্বামীর সাথে টানাপড়েন সৃষ্টি হয় বাঁধনের। গত বছরের ৩ আগস্ট মেয়ের কাস্টডি চেয়ে মামলা করেন বাঁধন। এর রায়ে ঢাকার দ্বাদশ সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক আজ সোমবার সকালে দেওয়া রায়ে বলেছেন, কন্যাশিশুর অভিভাবক হচ্ছেন মা। মায়ের জিম্মায়ই মেয়ে থাকবে। কন্যার সর্বোত্তম মঙ্গলের জন্য মায়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এটিকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি যুগান্তরকারী রায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রায়ে আদালত আরও বলেন, শিশুকে নিয়ে মা দেশের ভেতরে এবং বাইরে যেতে পারবেন, যেহেতু মা-ই কন্যাশিশুর অভিভাবক।
রায়ের প্রতিক্রিয়া বাঁধন জানান, তা একটি যুগান্তকারী রায় এবং আদালত পাড়ায় মাইলফলক। আইনজীবীরা বললেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, এই উপমহাদেশ এটি বিরল উদাহরণ হয়ে থাকবে। এই আদেশ পাবার জন্য আমি মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ। কন্যাশিশুর অভিভাবক হচ্ছেন মা। মায়ের জিম্মায়ই মেয়ে থাকবে। বাবা মাসে কেবল দুই দিন মায়ের বাড়িতে গিয়ে মায়ের উপস্থিতিতে মেয়েকে দেখে আসবেন, কিন্তু কন্যার সর্বোত্তম মঙ্গলের জন্য মায়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। অর্থাৎ, মাননীয় আদালত সাধারণ ‘কাস্টডি’ নয়, বরং সম্পূর্ণ ‘গার্ডিয়ানশিপ’ আমাকে দিয়েছেন।
২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর মাশরুর সিদ্দিকীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহবিচ্ছেদ হয় বাঁধনের। গত বছর আগস্টে বাঁধন অভিযোগ করেন, মেয়ে সায়রাকে দেখা করার কথা বলে নিয়ে যান সাবেক স্বামী। জোর করে তাকে কানাডা নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। বাবা তার কন্যাশিশুর পাসপোর্ট আটকে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ করেন এই অভিনেত্রী। বিজ্ঞ আদালত যেটি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
আইনজীবী দিলরুবা শরমিনের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বাঁধন। বলেন, তিনি মামলাটি কেবল আইন দিয়ে নয়, মানবিক দিক বিবেচনা করে পরিচালনা এবং আইন ও মানবিক দু’দিক থেকেই উপস্থাপন করেছেন।
বাঁধন বলেন, সামান্য যে ৫ লাখ টাকার দেন মোহর সে’টির কোনো দাবি করিনি, কন্যার ভরণ-পোষণ বাবা এতদিন করেননি, কোনো খোরপোষ দেননি, আমি চাইওনি এবং সেটা প্রকাশ্য আদালতেই আজকে বলেছি। বাবা’র কাছে ভরণপোষণ – এটা প্রতিটা মেয়ের অধিকার। সেই কাজটা এতদিন আমিই করে এসেছি। তিনি করবেন কিনা, সেটা তারই বিবেচনায় থাক।
যারা তার পাশে থেকে সমর্থন যুগিয়েছেন তাঁদের প্রত্যেককে গভীর কৃতজ্ঞতা জানান বাঁধন।
বাঁধনের আইনজীবী দিলরুবা শরমিন বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, উপমহাদেশ এই রায় উদাহরণ হয়ে থাকবে। আমরা মামলাটি কেবল আইন দিয়ে নয়, মানবিক দিক বিবেচনা করে পরিচালনা করেছি। আমরা আইন ও মানবিক—দুই দিক থেকেই মামলাটি উপস্থাপন করেছি।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply