সমান তালে ধারাভাষ্য এবং ক্রিকেট, দুটোই চালিয়ে যাচ্ছেন ৩৬ বছর বয়সী দীনেশ কার্তিক। চলতি আইপিএলে ১৯৭ গড়ে ব্যাট করা ডিকে আবারও গায়ে তুলতে চান জাতীয় দলের রঙিন জার্সি। সেই পরিকল্পনামাফিক বিদায় জানিয়েছেন লাল বলের ক্রিকেটকে, সীমিত ওভারের ক্রিকেটের জন্য করছেন বিশেষায়িত অনুশীলন। এই বয়সে জাতীয় দলে ফেরার জন্য দারুণ পরিশ্রমের ফলও পাচ্ছেন তিনি। আইপিএলে দুর্দান্ত পারফরমেন্সে কচুকাটা করছেন প্রতিপক্ষ বোলারদের। প্রমাণ করেছেন, তারুণ্যকে আটকাতে পারে না বয়সের ফ্রেম।
মোস্তাফিজুর রহমানের এক ওভারে ২৮ রান তুলেছেন দীনেশ কার্তিক। অনিয়মিত ক্রিকেট দর্শকের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, এমন নির্দয় হওয়ার জন্য দীনেশ কি শুধু বাংলাদেশি বোলারদেরই বেছে নেন! যদি এমন প্রশ্ন এসে থাকে পাঠকের মনে, তবে জেনে রাখুন, এবারের আইপিএলে ১৬ই এপ্রিল পর্যন্ত ৬ ম্যাচে দীনেশ কার্তিকের স্ট্রাইক রেট ২১০, গড় ১৯৭। দু’বার হয়েছেন ম্যাচসেরা। ব্যাটিংয়ে নেমে খুব দ্রুত মানিয়ে নেয়া এবং রানের গতি বাড়ানো, তার সাথে দুর্দান্ত রানিং বিটুইন দ্য উইকেটস- সব কিছু মিলিয়ে ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করছেন ডিকে। তাই, ৩৬ বছর বয়সী দীনেশ কার্তিককে আবারও ভারতীয় দলে দেখার দাবি উঠেছে ক্রিকেট মহলে। কিন্তু, কীভাবে এতটা বদলে গেলেন কার্তিক? এই প্রশ্নের উত্তরে রয়েছে সঠিক পরিকল্পনা, নিয়মানুবর্তিতা এবং অধ্যবসায়ের গল্প।
গত বছর কোভিডের জন্য আইপিএলের প্রথম পর্ব স্থগিত হয়ে গেলে দীনেশ মনোযোগ দেন ধারাভাষ্যে। চমৎকার বাচনভঙ্গি, রসবোধ এবং ক্রিকেটীয় বিশ্লেষণের জন্য অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন ধারাভাষ্যেই ক্যারিয়ার গড়তে যাচ্ছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। কিন্তু, ধারাভাষ্যের সাথে কঠোর পরিশ্রম চালাচ্ছিলেন মাঠের ক্রিকেটেরও। এরই মধ্যে বিদায় জানিয়েছেন লাল বলের ক্রিকেটকে। নিজের পরিকল্পনা সাজিয়েছেন শুধুমাত্র সীমিত ওভারের ক্রিকেটের জন্য। ফিটনেস লেভেলটা নতুন করে গড়েছেন শুধুমাত্র সাদা বলের জন্য, প্র্যাকটিস রুটিন তৈরি করেছেন শুধুমাত্র মিডল এবং লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটিংকে কেন্দ্র করে। মিডল অর্ডার ব্যাটিং ধারালো করার জন্য চেন্নাই থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে থানি নামক এক শহরে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টও খেলেছেন ডিকে।
এত নিবেদন, প্রতীজ্ঞা ও প্রত্যয়ের সব কিছুই ভারতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের জন্য। জাতীয় দলে ফেরার জন্য সম্ভাব্য সব কিছুই করতে চান দীনেশ কার্তিক। ৩৬ বছর বয়স এক্ষেত্রে হতে পারে একটা বাধা। তবে কার্তিকের ফিটনেস এবং ফর্ম উল্টো চোখরাঙানি দিচ্ছে তার বয়সকে। তবে, তারুণ্যকে যে বয়সের ফ্রেমে আটকে রাখা যায় না, তা-ই যেন প্রমাণ করছেন ডিকে।
আরও পড়ুন: মোস্তাফিজের এক ওভারে ২৮ রান নিলেন কার্তিক
এম ই/
Leave a reply