বিশ্ব অর্থনীতির যে বৃহৎ ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করছে না কেউ

|

জনশূন্য সাংহাইয়ের রাজপথ। ছবি: সংগৃহীত

চীনে কঠোরভাবে চলছে অনির্দিষ্টকালের লকডাউন। আংশিক এবং পূর্ণমাত্রার লকডাউনের আওতায় রয়েছে চীনের ৪৫টি শহরের প্রায় ৪০ কোটি অধিবাসী। আর এই জনসংখ্যা প্রতিনিধিত্ব করে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের জিডিপির প্রায় ৪০ শতাংশ বা ৭.২ ট্রিলিয়ন ডলার। জাপানের আর্থিক প্রতিষ্ঠান নোমুরা হোল্ডিংসের দেয়া তথ্য মতে, বিশ্ব অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে বৃহৎ এক ঝুঁকির মাঝে। কারণ, চীনে বিনিয়োগকারীরা এখনও দেশটির লকডাউনে থমকে যাওয়া জীবনযাত্রার কারণে সৃষ্ট সম্ভাব্য বৈশ্বিক মন্দার ভয়াবহ দিকটি সেভাবে মূল্যায়ন করেনি। খবর সিএনএন বিজনেসের।

নোমুরার অন্যতম প্রধান অর্থনীতিবিদ চীনের লু টিং বলেন,বিশ্ব বাজার এখনও চীনে অনির্দিষ্টকালের লকডাউনের প্রভাবকে অবমূল্যায়ন করছে। কারণ, পুরো বিশ্বের নজর এখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দিকে। এছাড়া, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের হার বৃদ্ধি নিয়েই ভাবিত অধিকাংশ গণমাধ্যম। ২৫ মিলিয়ন মানুষের শহর সাংহাইতে অনির্দিষ্টকালের লকডাউনকে সবচেয়ে উদ্বেগের ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন লু টিং, যে শহরটি চীনের অন্যতম প্রধান আমদানি ও রফতানি কেন্দ্র।

সাংহাই বন্দর। ছবি: সংগৃহীত

সিএনএন বিজনেসের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, চীনের লকডাউনে খাবার অভাব, চিকিৎসা সুবিধার ঘাটতি যেমন দেখা দিয়েছে, তেমনি ঘটেছে পোষা প্রাণী মেরে ফেলার মতো ঘটনাও। এমনকি বিশ্বের সবচেয়ে বড় বন্দরটিতে এখন কর্মীর সংখ্যাও অপ্রতুল। ২০২১ সালে চীনা মালবাহী পরিবহনের ২০ শতাংশ পরিচালনা করেছিল যে সাংহাই বন্দর, সেটি পড়ে রয়েছে অনেকটাই স্থবির অবস্থায়। রেফ্রিজারেশন ছাড়া যেসব খাদ্যদ্রব্য রেখে দেয়া হয়েছে কন্টেইনার বা পাত্রগুলোয়, সেসবও পচে যাচ্ছে। অন্যত্র যাওয়ার আগে আগত কার্গোগুলো এখন সাংহাইয়ের বন্দরগুলোয় কমপক্ষে গড়ে ৮ দিন ধরে আটকে আছে। সাপ্লাই চেইন ভিজিবিলিটি প্ল্যাটফর্ম প্রজেক্ট ৪৪ অনুযায়ী, রফতানি দ্রব্য মজুদের সময় নিয়েও শুরু হয়েছে অসামঞ্জস্য। কারণ, ওয়ারহাউস থেকে সঠিক সময়ে বন্দরে এসে পৌছুঁতে পারছে না নতুন কন্টেইনার।

ছবি: সংগৃহীত

কার্গো এয়ারলাইনগুলো সাংহাইতে আসা-যাওয়ার সকল ফ্লাইট বাতিল করেছে। সেই সাথে, আমদানি ও রফতানির কাজে নিয়োজিত ৯০ শতাংশেরও বেশি ট্রাক রয়েছে স্থবির অবস্থায়। ইউরেশিয়া গ্রুপের চীন ও উত্তর-পূর্ব এশিয়ার প্রধান মাইকেল হিরসন বলেছেন, চীনের ওপর লকডাউনের প্রভাব অনেক বড় এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে এর আঘাত বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, অন্তত আগামী ছয় মাসের জন্য আরও বড় মাত্রার অস্থিরতা এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিপর্যয়ের মধ্যে আমরা পড়তে যাচ্ছি।

আরও পড়ুন: ভয়াবহ দুর্যোগে শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যখাত, মুঠোফোনের আলোয় অস্ত্রোপচার

এম ই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply