প্রেমিকার আপলোড করা ছবির সূত্রে গ্রেফতার হয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ও অন্যতম ক্ষমতাশালী মাদক চোরাচালান-ক্রাইম সিন্ডিকেট সিনালোয়া কার্টেলের কুখ্যাত সদস্য ব্রায়ান দোনাসিয়ানো অলগুইন ওরফে এল পিট (৩৯)। রোববার (১৭ এপ্রিল) কলম্বিয়ার পর্যটন শহর কালি থেকে তাকে গ্রেফতার করে কলম্বিয়া পুলিশ। খবর ডেইলি এল তিয়াম্পোর।
প্রেমিকার সাথে তোলা ছবি ফেসবুকে আপলোড করাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে এল পিটের। আপলোড করা সেই পোস্ট অনুসরণ করেই কলম্বিয়া পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দেশটির শীর্ষ দৈনিক এল তিয়াম্পো।
জানা গেছে, ২০১৬ সাল থেকে কারাবন্দী বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও অন্যতম ক্ষমতাশালী অপরাধচক্র সিনালোয়া কার্টেলের পাতরোন (বস) হোয়াকিন ‘এল চ্যাপো’ গুজম্যান লোয়েরার অনুপস্থিতিতে তার যে কয়েকজন সহচর কার্টেলকে সক্রিয় রেখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম এল পিট।
এল তিয়াম্পোর প্রতিবেদনে জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই নিয়মিত মেক্সিকো-কলম্বিয়া যাতায়াত করছিলেন এল পিট। এর মধ্যেই কলম্বিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী কুখ্যাত গেরিলা গোষ্ঠী রেভোল্যুশনারি আর্মড ফোর্সেস অব কলম্বিয়ার (ফার্ক) সাথে কয়েকদফা বৈঠক করেছে তিনি।
কলম্বিয়া পুলিশের ধারণা, ফার্কের সদস্যদের সাথে হাত মিলিয়ে কলম্বিয়ার মাদক বাণিজ্যে সিনালোয়া কার্টেলের নিয়ন্ত্রণকে আরও শক্তিশালী করাই ছিল এল পিটের সাম্প্রতিক এসব সফরের উদ্দেশ্য।
রোববার (১৭ এপ্রিল) কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতায় ফার্কের প্রতিনিধিদের সাথে এক বৈঠক শেষে পর্যটন শহর কালিতে ফিরে যান এল পিট। কালির একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টেই নিজের মেক্সিকান বান্ধবীকে নিয়ে উঠেছিলেন এল পিট, তার ওই বান্ধবী পেশায় একজন মডেল বলে জানিয়েছে কালি পুলিশ।
পুলিশ আরও জানায়, অ্যাপার্টমেন্টে ফেরার পর প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে বের হন এল পিট। এরপর, কালি ডাউনটাউনের কোনো এক এলাকায় রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে বান্ধবীকে চুম্বন করে ছবি তোলেন তিনি। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই ছবি ফেসবুকে আপলোড করেন এল পিটের বান্ধবী। ওই পোস্ট আপলোডের পর থেকেই তাদের অনুসরণ করতে শুরু করে স্থানীয় পুলিশ। এবং রাতে অ্যাপার্টমেন্টে ফেরার কিছুক্ষণ পরই এল পিটকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কালির স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গ্রেফতার এড়াতে পুলিশ সদস্যদের দুই লাখ পঁয়ষট্টি হাজার ডলার ঘুষ সেধেছিলেন এল পিট। কিন্তু পুলিশ সদস্যরা ঘুষ নিতে রাজি না হয়ে সাথে সাথেই গ্রেফতার করেন তাকে।
প্রসঙ্গত, সত্তরের দশক থেকেই মাদক, অস্ত্র ও অবৈধ অর্থ পাচারসহ নানা কারণে অসংখ্যবার পত্রিকার শিরোনামে এসেছে সিনালোয়া কার্টেলের নাম। নব্বইয়ের দশকে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা ছাড়িয়ে তাদের ক্রাইম নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী। সিনালোয়া কার্টেল এতটাই বেপরোয়া যে আন্তর্জাতিক মাদকপাচারকারী হিসেবে বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশ রেড অ্যালার্ট জারি করেছে এ কার্টেল ও এর সদস্যদের বিরুদ্ধে।
/এসএইচ
Leave a reply