ঈদের উচ্ছ্বাস নেই নাহিদ ও প্রীতির পরিবারে

|

কোটি কোটি মানুষের খুশীর দিনে কারো কারো মনে একদমই আনন্দ নেই। বিভিন্ন ঘটনা-দুর্ঘটনায় এ বছর যারা মারা গেছেন, ঈদের খুশী নেই সেসব পরিবারে। সম্প্রতি নিউমার্কেটে সংঘর্ষে ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে নিহত হওয়া নাহিদ এবং শাহজাহানপুরে চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের ভুক্তভোগী প্রীতির পরিবারে নেই ঈদের উচ্ছ্বাস।

ক্ষমতাসীন দলের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের বলি রাজধানীর বদরুন্নেসা কলেজের শিক্ষার্থী প্রীতি। মালিবাগে দুর্বৃত্তের গুলিতে প্রাণ হারান। গেল ঈদেও প্রানবন্ত প্রীতি এখন পরিবারের কাছে শুধুই স্মৃতি। এবার বাড়িতে রান্না হয়নি ঈদের বিশেষ খাবার। ঈদের আয়োজন বলতে কিছুই নেই প্রীতির বাসায়।

প্রীতির কবরের পাশে কথা হয় তার বাবা জামাল উদ্দিনের সঙ্গে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, গত ঈদে সে তার ভাই ও আমার জন্য কেনাকাটা করে। নিজের পছন্দমতোই কেনাকাটা করে। চঞ্চল মেয়ে, ঘর মাতিয়ে রাখতো। ওর পছন্দের সেমাই এবার তার মা রান্না করে নাই। মেয়ে নেই কার জন্য রান্না করবে বলে প্রশ্নও তোলেন প্রীতির বাবা।

কথা বলার সময় কান্না চেপে রাখতে পারেননি প্রীতির বাবা।

খুশির ঈদেও ডেলিভারি ম্যান নাহিদের পরিবারে শোকের ছায়া। মাত্র কয়েকদিন আগে নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থীর সহিংসতায় প্রাণ হারায় সে। তাই ঢাকার কামরাঙ্গীচরের বাসায় আহাজারির মধ্যেই দিন কাটছে নাহিদ হাসানের পরিবারের। বিয়ের পর টোনাটুনির সংসারে এটাই ছিল প্রথম ঈদ। স্ত্রী ডালিয়াকে ঝকমকে একটি শাড়ি দিয়ে চমক দিতে চেয়েছিলেন নাহিদ। নাহিদকে ছাড়া এমন ঈদ স্বপ্নেও কল্পনা করেনি তার পরিবার।

নাহিদ হাসানের মা নার্গিস বেগম জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষ্যে নাহিদ তার স্ত্রীর জন্য শাড়ি পছন্দ করেছিলেন। আর তা মাকে বলেন। কথাটি যেন স্ত্রীকে না বলে সেজন্যও মাকে বলেন। কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন নাহিদের মা।

নাহিদের মায়ের চোখেও ছিল পানি।

অন্যদিকে নাহিদ হাসানের স্ত্রী ডালিয়া আক্তার বলেন, যাকে ঘিরে ঈদ ছিল সে তো নেই। ঈদের পরের দিন দেশে যাওয়ার কথা ছিল। সাত মাস হইছে বিয়ের। অনেক স্বপ্ন ছিল, অনেক আশা ছিল। এক নিমিষেই সব উলট-পালট হয়ে গেছে।

গণমাধ্যমে নাহিদ ও প্রীতির খুনের খবর ফলাও করে আসার পর সরকারি-বেসরকারিভাবে অনেকেই পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু তাতে তো আর হারানো স্বজনকে ফিরে পাবে না পরিবার। তাদের আশা, এ রকম খুনের মতো আর কোনো ঘটনা না ঘটুক বাংলাদেশে।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply