‘মা’ পদবি নামের এক ব্যক্তি আটক হওয়ার খবরে মুহূর্তেই জ্যাক মা তার আলিবাবার শেয়ারের ২৬ বিলিয়ন ডলার খুইয়েছেন। নামে পারিবারিক উপাধি ‘মা’ আছে, চীনে এমন এক ব্যক্তিকে আটকের খবরে এমন কাণ্ড ঘটেছে। খবর সিএনএনের।
খবরে বলা হয়, হংকং শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারে গত মঙ্গলবার প্রায় ৯ দশমিক ৪ শতাংশ ধস নামে। জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে চীনের হাংঝউ শহরে এক ব্যক্তিকে আটকের সংবাদ প্রকাশ করে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। ওই ব্যক্তির নামের বংশগত পদবি ‘মা’। আর ওই শহরেই আলিবাবার সদর দফতর অবস্থিত। যার সহপ্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা।
‘মা’ নামের এই ব্যক্তির আটকে আলিবাবার সহপ্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা আটক হয়েছেন, এমন আশঙ্কা ও সন্দেহে ই-কমার্স জায়ান্টের শেয়ারে ব্যাপক ধস নামে। সাম্প্রতিক সময়ে চীনের কমিউনিস্ট সরকারের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে জ্যাক মা’র। তাই এমন খবরে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়।
চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভির তথ্য অনুযায়ী, ‘বিচ্ছিন্নতাবাদ’ ও ‘রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ধ্বংসে উসকানি’ দিতে বিদেশি চীনা বিরোধী শত্রুদের গোপনে সহায়তা করেছেন এমন সন্দেহে গত ২৫ এপ্রিল সন্দেহভাজনকে ‘বাধ্যতামূলক ব্যবস্থার (আটক)’ আওতায় আনা হয়। এক বাক্যের এই প্রতিবেদনে দ্রুত অন্য রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলোও প্রচার করে। চীনের অন্য সংবাদমাধ্যমগুলোতে এটি ছড়িয়ে পড়ে। এতে হংকং শেয়ারবাজারে শেয়ার বিক্রি শুরু হলে আতঙ্কে কয়েক মিনিটের মধ্যে আলিবাবা প্রায় ২৬ বিলিয়ন ডলার বাজারমূল্য হারায়।
এমন হুলুস্থুল পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় ট্যাবলয়েড গ্লোবাল টাইমসের সাবেক এডিটর-ইন-চিফ হু চিজিন চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ওয়েইবোতে দ্রুত বিষয়টি স্পষ্ট করেন। তিনি লিখেন, প্রতিবেদনটি বিভ্রান্তিকর ছিল। কারণ যে সন্দেহভাজনের কথা বলা হচ্ছে, তার নামের তিনটি অংশ। জ্যাক মা’র নামের অংশ কেবল দুটি। চীনা ভাষায় তার নাম ‘মা ইউন’। পরে হুর বক্তব্যের সঙ্গে মিলিয়ে আগের প্রতিবেদনটি হালনাগাদ করে সিসিটিভি।
উদ্বেগ দূর করতে গ্লোবাল টাইমস এক প্রতিবেদনে আরও জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি ১৯৮৫ সালে ওয়েনঝউতে জন্মগ্রহণ করেন। জ্যাক মা জন্মগ্রহণ করেন ১৯৬৪ সালে হাংঝউতে। অভিযুক্ত একটি তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিতে হার্ডওয়্যার গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক হিসেবে কর্মরত। বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার পর আলিবাবার শেয়ার আবার ঘুরে দাঁড়ায়। দিন শেষে ক্ষতির অধিকাংশই পুষিয়ে নিতে সক্ষম হয় ই-কমার্স জায়ান্টটি।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে অসন্তোষ ছিল জ্যাক মা’র। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল তার ব্যবসা। এ নিয়ে মুখ খুলে চীন সরকারের তোপে পড়েন তিনি। আলিবাবার বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গের তদন্ত শুরু করে চীনা কর্তৃপক্ষ। একপর্যায়ে দুই মাসের বেশি সময় আড়ালে থাকার পর ২০২১ সালের জানুয়ারির মাঝামাঝি প্রকাশ্যে আসেন জ্যাক মা।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ মামলা দিতে আসা কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে
ইউএইচ/
Leave a reply