বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, ব্যবসায়ীদের আপত্তি থাকলেও অভিযান অব্যাহত থাকবে। দ্রুতই সারাদেশে টিসিবির মাধ্যমে সয়াবিন তেল বিক্রির কথাও জানান মন্ত্রী। এছাড়াও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে আরও কঠোর হওয়ার আভাসও দেন তিনি। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আমরা মনে করি যতক্ষণ ব্যবসায়ীরা ঠিকমতো সাপ্লাই দেয়া শুরু না করবে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত বাজারে হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন; আমরা তৎপরতা চালিয়ে যাবো।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের অভিযানে বেরিয়ে আসে, ক্রেতাদের জিম্মি করে গুটিকয়েক ব্যবসায়ী এই শর্ত জুড়ে দেয় যে, সয়াবিন তেল চাইলে নিতে হবে অন্য পণ্য। তেলের সঙ্গে অন্য পণ্য নেবার শর্ত যুক্ত করা নিয়ে বৃহস্পতিবার (১২ মে) মত বিনিময়ের আয়োজন করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এই সভায় জানানো হয়, সোমবার (১৬ মে) এ বিষয়ে অভিযানে নামবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
এই বৈঠকে অংশ নেয় পাইকারী ব্যবসায়ী এবং বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের একাধিক প্রতিনিধি। সেখানে ব্যবসায়ীরা জানান, তেলের সঙ্গে চা পাতা, হালিমসহ অন্যান্য পণ্য নেবার শর্ত যুক্ত করা হয়, যা বিরক্তিকর। বৈঠকে কারওয়ান বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন বলেন, সয়াবিন মানে সয়াবিন আর সরিষা মানে সরিষা। কিন্তু যখন একটা পণ্যকে আরেকটা পণ্যের সাথে বোঝা হিসেবে বেঁধে দেয়া হয়, তখন তা ক্রেতার জন্য ভোগান্তির কারণ হয়। আর আমরা ব্যবসায়ীরাও হয়রানির শিকার হই।
উৎপাদক কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে এই ধরনের শর্ত জুড়ে দেয়া হয়নি বলে দাবি করা হয়। বলা হয়, বিপণন প্রতিষ্ঠান থেকে এমন নির্দেশনা ছিল না। উপস্থিত ব্যবসায়ীরা বলেন, সয়াবিন তেলের প্যাকেজে অন্য কোনো পণ্য যোগ করা হয়নি। তাছাড়া, কোথাও এমন ঘটনা ঘটলে তাদের সেটা জানানোর জন্যও বলা হয়। উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জানান, এ ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক, সেটি তারাও চান।
তবে তেলের সঙ্গে অন্যান্য পণ্য যুক্ত করার প্রমাণ পাওয়া গেছে জানিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান বলেন, আমার কাছে প্রমাণ আছে কারা কারা এই কাজ করেছে। আমি কিন্তু আজ প্রমাণ নিয়েই বসেছি। আজ দুই পক্ষের তথ্য নিলাম। আমার কাছে তথ্য আছে যে, বাজারে এই কাজটা করা হচ্ছে। আমরা তেলের ক্ষেত্রে যেমন অভিযান পরিচালনা করছি, তেমনি আগামী সপ্তাহ থেকে এই বিষয়েও অভিযান শুরু করা হবে।
বৈঠকে বলা হয়, বাজারে যারাই অনিয়ম করবে তাদের এখন থেকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান বলেন, সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ব্যাপারে আমাদের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কেন আমরা কেবল জরিমানা করছি এবং কেন আমরা বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করছি না। আমরা এবার সেটির দিকেই যাচ্ছি।
আরও পড়ুন: খুলনার তিন প্রতিষ্ঠান থেকেই ২ লাখ ৩৬ হাজার লিটার ভোজ্যতেল জব্দ
/এম ই
Leave a reply