অনেক সময় আমরা অনেক ধরনের উদ্বেগ ও মানসিক টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাই। বয়সের অভিজ্ঞতায় তা অনেক সময় কাটিয়ে উঠি, অনেক সময় কাছের মানুষের কাছে মনের কথা শেয়ার করি কিংবা আমাদের বিষন্ন ভাব সহজেই ফুটে ওঠে অন্যদের চোখে, ফলে সময় মতো বিষাদগ্রস্ত হওয়া থেকে নিজেকে বাঁচানোর একটি উপায় খোলা থাকে। কিন্তু বয়সে যারা শিশু, তাদের মানসিক উদ্বেগ তৈরি হলেও তা সহজে লক্ষণ দেখে বোঝা যায় না। তবে সময় মতো এ সমস্যা দূর না করা গেলে শিশু মনে তৈরি হতে পারে নানা ভয় ও স্থায়ী বিষন্নতা।
পড়াশোনার চাপ এবং তীব্র প্রতিযোগিতার টানাপোড়েনে অনেক সময়ই শিশুরা মানসিক চাপের মধ্যে থাকে। বর্তমানে পড়াশোনা নিয়ে চলমান প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে অনেক শিশুই মানসিকভাবে চাপের মধ্যে থাকে। পারিপার্শ্বিক বা পারিবারিক কোনো ঘটনার কারণেও তারা অবসাদে আচ্ছন্ন হয়ে যেতে পারে। ছোটবেলা থেকে সন্তান যদি মানসিক চাপের মধ্যে থাকে, তা হলে তা তার ব্যবহারে বড় প্রভাব ফেলবে। উদ্বেগ ও মানসিক চাপের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে সে। তাই আপনার সন্তান আপনার অজান্তেই মানসিক অবসাদে চলে যাচ্ছেন কিনা তা বোঝা দরকার আগেভাগেই। এ জন্য সন্তানের বেশ কিছু লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
১। দুঃস্বপ্ন দেখা
কোনো শিশু উদ্বেগ ও আশঙ্কার মধ্যে দিন কাটালে ঘুমের মধ্যে সে নিয়মিত দুঃস্বপ্ন দেখে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ছোটরা ঘুমের মধ্যে আতঙ্কে কেঁপে কেঁপে ওঠে। এমনটা প্রায়শই হলে বোঝার চেষ্টা করুন, তার মনের মধ্যে জমে থাকা ভয়টা ঠিক কোথায়।
২। বিছানা ভিজিয়ে ফেলা
মানসিক চাপে থাকা শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। সব সময়ে তাদের মনে কাজ করে অজানা আতঙ্ক। এই কারণে অনেক শিশুই বিছানা ভিজিয়ে ফেলে। এমনটা হলে রাগারাগি করবেন না। এর কারণ কী, সেটা বোঝার চেষ্টা করুন।
৩। খাওয়াদাওয়ায় অনীহা
শিশুরা যদি মানসিক অশান্তিতে ভোগে, তা হলে তার ছাপ পড়বে তাদের খাওয়াদাওয়ার উপরেও। হয় সে কম খাচ্ছে, না হলে খুব বেশি খাচ্ছে। দু’টিই কিন্তু ভালো লক্ষণ নয়। আপনার সন্তানের ক্ষেত্রেও কি এমনটাই হচ্ছে? তা হলে ওর সঙ্গে কথা বলে গল্পের ছলে সমস্যাটা বোঝার চেষ্টা করুন।
৪। আক্রমণাত্মক আচরণ
মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে আমরা অনেক সময় অল্পতেই রেগে যাই। ঠিক এ রকমটা বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে। কোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে তারা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে। হঠাৎ যদি দেখেন আপনার সন্তান অকারণেই চিত্কার করছে, কারও সঙ্গে কথা বলতে চাইছে না কিংবা কথায় কথায় অন্যের উপর হাত চালাচ্ছে তবে তা উদ্বেগ ও আতঙ্কের লক্ষণ হিসেবে জানবেন। এই লক্ষণগুলো কখনই অবহেলা করবেন না। প্রয়োজনে কোনো মনোবিদের সাহায্য নিতেও দ্বিধাবোধ করবেন না।
৫। মনোসংযোগের অভাব
আপনার সন্তান কি হঠাৎ খুব অমনোযোগী হয়ে উঠেছে? স্কুলের কাজ সময় মতো শেষ করতে পারছে না? খেলাধুলাতেও ওর মন নেই? হতেই পারে পড়াশোনা বা খেলাধুলোয় আরও ভাল করার চাপে সে মনোসংযোগ হারিয়ে ফেলছে। চেষ্টা করুন কথা বলে ওর মনের উদ্বেগ দূর করার।
এসজেড/
Leave a reply