হিলি প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের বিরামপুরে গরু ব্যবসায়ী খাদেমুল ইসলাম হত্যা মামলার প্রধান আসামি সায়েম আলী ওরফে শাহিন আলীকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত শাহীনকে শনিবার (২৮ মে) আদালতে হাজির করা হলে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন তিনি। আসামি সায়েম আলী ওরফে শাহিন পৌরশহরের পূর্বপাড়া মহল্লার মৃত ওয়াজেদ আলীর ছেলে। বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুমন কুমার মহন্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার দিনাজপুর আদালতে জবানবন্দিতে শাহিন বলেন, চলতি মাসের ১৭ তারিখ রাতে নিহত খাদেমুল বাড়িতে ফিরছিলেন। এসময় শাহিন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। খাদেমুল বাড়িতে প্রবেশের সময় পাশ থেকে একটি ইট দিয়ে সজোরে পিঠে আঘাত করেন। আচমকা আঘাতে খাদেমুল অজ্ঞান অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মারা যান। এ সময় খাদেমুলের কাছে থাকা গামছা তিন টুকরো করে খাদেমুলের হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে ওই বাড়িতে থাকা একটি লোহার শাবল দিয়ে মাটি খুঁড়ে খাদেমুলকে মাটিতে পুঁতে রেখে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
আদালতে শাহিন বলেন, বিরামপুর পূর্বপাড়া এলাকায় দুজনেরই বাড়ি। শাহিনের বাড়ির সামনে নিহত খাদেমুলের দুই শতাংশ জমি আছে। ওই জমিটির মালিকানা নিয়ে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে উভয়পক্ষের মামলা চলছিল। সম্প্রতি ওই জমিটি খাদেমুল স্থানীয় অন্য এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। জমিটি অন্য কেউ নিলে শাহিনের বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তা থাকবে না ভেবে খাদেমুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ মে সন্ধ্যায় ঘরে তালা লাগিয়ে বাহিরে যাওয়ার পর থেকে খাদেমুল ইসলাম নিখোঁজ হন। পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে ২৪ মে থানায় একটি জিডি করে। জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিহার রঞ্জন বলেন, মঙ্গলবার (২৪ মে) বিকেলে নিখোঁজ খাদেমুলের বাড়িতে অনুসন্ধান করতে গিয়ে প্রাচীর সংলগ্ন টিউবওয়েলের নালার পাশে বালুভর্তি বস্তার পাশ থেকে দুর্গন্ধ পাই। সন্দেহ হলে ওই স্থান থেকে বস্তা সরানো হয়, পরে সেই গর্ত থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় খাদেমুলের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় ওই দিন নিহতের মেয়ে জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে পিতাকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার দায়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। পরে পুলিশ বিস্তর তদন্ত ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার মূল আসামি সায়েম আলী ওরফে শাহিনকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। শাহিন আলীর দেওয়া তথ্য মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ইট, মাটি খোড়ার কাজে ব্যবহৃত শাবল ও শাহিনের বাড়ি থেকে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়।
/এডব্লিউ
Leave a reply