লক্ষ্মীপুরে স্কুল বন্ধ করে আওয়ামী লীগের সম্মেলন

|

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

স্কুল খোলা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ করে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর মার্চেন্টস অ্যাকাডেমি মাঠে রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। এ জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এক দিন আগেই শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেন, মঙ্গলবার ক্লাস হবে না।

রায়পুর মার্চেন্টস অ্যাকাডেমি (উচ্চ বিদ্যালয়) মাঠে আয়োজিত উপজেলা আওয়ামী লীগের এ সম্মেলন শুরু হয়েছে মঙ্গলবার (৩১ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। সম্মেলনের জন্য বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।

সম্মেলনের জন্য সকাল নয়টা থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী বিদ্যালয়ের মাঠে সমবেত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফকে সম্মেলনের প্রধান অতিথি করে আয়োজিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি করা হয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপনকে। সম্মেলন উপলক্ষে রায়পুর পৌর এলাকায় অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে নেতা-কর্মীরা অসংখ্য তোরণ, ব্যানার-ফেস্টুন ও প্রদর্শনী বোর্ড স্থাপন করেছেন। এগুলোর বেশিরভাগই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীদের।

স্থানীয়রা জানান, জেলা পরিষদ মিলনায়তন বা শহরের অন্য কোনো মিলনায়তনে সম্মেলন হলে স্কুল বন্ধ রাখার প্রয়োজন হতো না। শিক্ষার্থীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হতো না। প্রায় সময়ই বিদ্যালয়ের মাঠে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সমস্যা হয়। তারা আরও বলেন, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যালয় মাঠে বিশাল প্যান্ডেল করে মঞ্চ করা হয়। এ কারণে সপ্তাহব্যাপীই শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা বিঘ্নিত হয়েছে।

রায়পুর মার্চেন্টস অ্যাকাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির জানান, সম্মেলনের কারণে বিদ্যালয় ছুটি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিদ্যালয়ের সংরক্ষিত ছুটি দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম সাইফুল হক বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সংরক্ষিত ছুটি থেকে বন্ধ রাখতে পারেন। এ ছাড়া হাজার হাজার নেতা-কর্মী ও মাইকের শব্দের কারণে পাঠদানও সম্ভব হতো না।

উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খোকন বলেন, কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই বিদ্যালয় মাঠে সম্মেলন করা হচ্ছে। অন্য জায়গায় বিপুল লোকের সমাগমে সম্মেলন করার স্থান না থাকায় এখানে করা হচ্ছে।

রায়পুর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০০৩ সালে। ওই কমিটিতে কার্যকরী কমিটির সদস্য ছিলেন ৬৭ জন। এর মধ্যে সভাপতিসহ মারা গেছেন ২০ নেতা। দল চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে। এতে ঝিমিয়ে পড়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রম। ২০ বছর ধরে নেই দলীয় কার্যালয়ও। তারা এবারের সম্মেলনে সমঝোতার কমিটি চান না। তাদের দাবি, নেতা-কর্মীর মতামতে নেতা নির্বাচন হোক। একটি পক্ষ সমঝোতার কমিটির জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নানা সংকট মোকাবিলা করতে গিয়ে সম্মেলন করার সময় হয়ে ওঠেনি। সম্মেলনের মাধ্যমেই কমিটি করা হবে। সে লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছে। তবে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশ সবাই মেনে নিতে প্রস্তুত।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply