ইউরো জয়ী ইতালিকে বিধ্বস্ত করে ফিনালিসিমা আর্জেন্টিনার

|

ইউরোপের গতি ও কৌশলের কাছে লাতিন ছন্দের পরাজয় যে সহজে ঘটছে না, তারই সাক্ষী হয়ে রইলো যেন ঐতিহ্যবাহী ওয়েম্বলি। ইউরোজয়ী ইতালিকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে লা ফাইনালিসিমা জিতে নিলো লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। পিটার ড্রুরির ভাষায় আজকের ম্যাচের ‘মাইটি আর্জেন্টিনা’ ইউরোপের মাটিতেই জানান দিলো, ৩ বছর ধরে অপরাজিত লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা ইউরোপীয় প্রতিপক্ষ পেলেও রেকর্ড প্রলম্বিত করতে পারে।

ইতালিয়ান বর্ষীয়ান ডিফেন্ডার জর্জিও কিয়েল্লিনির এটিই ছিল আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। কিন্তু শেষের শুরু থেকেই মেসি-ডি মারিয়াদেরের বিপক্ষে ধুকঁতে হয় য়্যুভেন্টাসের এই ডিফেন্ডারের নেতৃত্বে ইতালির জমাট রক্ষণভাগকে। রবার্তো মানচিনির দলকে প্রথমার্ধের প্রায় পুরোটা জুড়েই নিজেদের অর্ধে আলিবিসেলেস্তেদের আক্রমণ প্রতিহত করেই পার করতে হয়েছে। রদ্রিগো ডি পল, লো সেলসোদের প্রেসিংয়ে শুরু থেকেই ইতালির রক্ষণে ত্রাস ছড়ান মেসি-মারিয়া-মার্টিনেজ। ম্যাচের ২৮ মিনিটে ডি বক্সের বাম প্রান্ত থেকে বোনুচ্চি, ডি লরেঞ্জো ও গোলরক্ষক দোন্নারুম্মাকে নিজের দিকে টেনে এনে অরক্ষিত লাউতারো মার্টিনেজকে যে ফাইনাল পাসটি দেন মেসি, সেখান থেকে ট্যাপ ইনে গোল না করতে পারাটাই হতো বেশি কষ্টসাধ্য।

মেসিকে নিয়ে সতীর্থদের এমন উল্লাসই বলে দেয় দলের বোঝাপড়াটা কেমন।

১ গোলে পিছিয়ে পড়েও তা শোধ করার মতো সঙ্গতি লা ফাইনালিসিমায় ইতালিকে পেতে দেয়নি ক্রমাগত হাই প্রেসিং করতে থাকা আর্জেন্টিনা। উল্টো মেসি-ডি মারিয়াদের তোপে রক্ষণের কাজেই ব্যস্ত সময় পার করতে হয়েছে বারেল্লা- জর্জিনিওদের। আর এরই মাঝে প্রথমার্ধের শেষ দিকে লাউতারো মার্টিনেজ ও আনহেল ডি মারিয়ার দুর্দান্ত ওয়ান-টু-ওয়ান থেকে ইতালির বিপক্ষে ২ গোলের লিড পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বল পেয়েই মার্টিনেজের ডিফেন্স চেড়া পাস দোন্নারুম্মার মাথার ওপর দিয়ে দুর্দান্ত চিপে বল জালে জড়ান কাতার বিশ্বকাপ খেলেই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারকে বিদায়ের ঘোষণা দেয়া আনহেল ডি মারিয়া।
দ্বিতীয়ার্ধেও আর্জেন্টিনার জমাট রক্ষণে চিড় ধরানো সম্ভব হয়নি ইতালির পক্ষে। বরং বলা ভালো, মিডফিল্ড থেকেই ইতালির আক্রমণ পরিণত হচ্ছিল আর্জেন্টিনার পাল্টা আক্রমণে। এ সময় একাধিক গোলও পেয়ে যেতে পারতেন আর্জেন্টিনার প্রাণভোমরা লিওনেল মেসি ও ডি মারিয়া। নাম্বার টেনের দুটি ও ডি মারিয়ার চমৎকার ভলি অসাধারণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা। কিন্তু শেষে আর পারেননি পাউলো দিবালার দারুণ শটটি ফেরাতে। শেষ বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তেই মেসির নেতৃত্বে আরও একটি আক্রমণ থেকে আলবিসেলেস্তেদের ৩ গোলের জয় নিশ্চিত করেন বদলি হিসেবে নামা পাউলো দিবালা৷ ইতালিকে নিয়ে একরকম ছেলেখেলা করেই ম্যারাডোনা-বাতিস্তুতাদের পর লিওনেল মেসির হাত ধরে আবার লা ফাইনালিসিমা জিতলো আর্জেন্টিনা। বলাই বাহুল্য ১৯৯৩ সালের সর্বশেষ ফিনালেসিমাজয়ী দলের নাম আর্জেন্টিনা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply