আসামিদের দেয়া তথ্যে অপহরণের তিন মাস পর নদীর পাড় থেকে উদ্ধার যুবকের বস্তাবন্দি লাশ

|

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কুড়িগ্রাম:

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় অপহরণের প্রায় সাড়ে ৩ মাস পর আসামিদের স্বীকারোক্তির প্রেক্ষিতে এক যুবকের হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) বিকেলে উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের বাঘেরহাট দক্ষিণ পাশে তেকানি গ্রামের জিঞ্জিরাম নদীর পাড় থেকে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত যুবক উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে শ্রমিক শহিদুল ইসলাম শালু মিয়া (৩৫)।

পুলিশ জানায়, চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে শহিদুল ইসলাম শালু মিয়াকে অপহরণ করা হয়। পরে ২৯ এপ্রিল অপহরণের অভিযোগ এনে দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য জাকির হোসেন, একই ইউনিয়নের ঝগড়ারচর গ্রামের খয়বর আলীসহ অজ্ঞাত আরও তিন জনকে আসামি করে রৌমারী থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন স্ত্রী রেজেকা খাতুন।

এ ঘটনায় গত ৩০ মে অভিযুক্ত ইউপি সদস্যকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ৩১ মে মঙ্গলবার ওই ইউপি সদস্যকে তিন দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তার জবানবন্দির ভিত্তিতে ১ জুন বুধবার ঢাকায় অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে অপর দুই আসামি খয়বর আলী ও জিয়াউর রহমান জিয়াকে গ্রেফতার করে রৌমারী থানায় নেয় পুলিশ। তাদের স্বীকারোক্তিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাস্থলে নিয়ে জিঞ্জিরাম নদীর পাড়ে পুঁতে রাখা হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দি অবস্থায় শহিদুল ইসলাম শালু মিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের পূর্ব কাউয়ারচর গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে জাকির হোসেন, একই ইউনিয়নের ঝগড়ারচর গ্রামের ছলে হকের ছেলে খয়বর আলী (৩২) এবং কাউয়ারচর গ্রামের তালেব মিয়ার ছেলে জিয়াউর রহমান জিয়া (৫০)।

হত্যার শিকার শালু মিয়ার স্ত্রী রেজেকা খাতুন বলেন, স্বামী শহিদুল ইসলাম শালু মিয়ার সাথে দীর্ঘদিন ধরে ইউপি সদস্য জাকির হোসেনের ব্যবসায়িক বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে এই বছর ১১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে জাকির হোসেন তার স্বামীকে মোবাইল ফোনে দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের স্লুইস গেট এলাকায় ডেকে নেন ওই ইউপি সদস্য। সেখানে গিয়ে দেখেন ইউপি সদস্য জাকির হোসেন, খয়বর আলীসহ অজ্ঞাত আরও দুই তিন জন অবস্থান করছিল। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা তার স্বামীকে জোর করে তুলে নিয়ে যান। এরপর থেকে তার আর খোঁজ না পেয়ে থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন।

মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্বে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা স্থানীয়দের। এলাকাবাসী বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে এরা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত।

রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুন্তাছের বিল্লাহ জানান, হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই যুবকের হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে ৩০ মে মামলার প্রধান আসামী ইউপি সদস্য জাকির হোসেনকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়। পরে তাকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। তার দেয়া তথ্যমতে ঢাকায় অভিযান চালিয়ে তার অপর দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, তা পরে জানা যাবে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply