অতি লোভে শরীর নষ্ট, সামলে খান আম-লিচু-কাঁঠাল

|

ছবি: সংগৃহীত

ফলের রাজা আম। এই মওসুমে আম না খেলে বড় মিস। তবে গুণের পাশাপাশি এই ফলের থেকে অনেক সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই শুধু আম কেন, এই সময়ের প্রিয় ফল লিচু, তালশাঁসও বুঝে শুনে খেতে হবে। এ বিষয়ে সাবধান করলেন ডায়েটিশিয়ান শর্মিষ্ঠা রায় দত্ত। তার কথায় তুলে ধরা হলো।

গরমকাল মানেই আম, জাম, লিচু, কাঁঠালের মওসুম। গ্রীষ্মকালীন ফলের স্বাদ-গন্ধে এক আলাদা চাহিদা রয়েছে। তবে আম, লিচুসহ এই সময়ের একাধিক মওসুমি ফল সুস্বাদু হলেও ক্যালোরির পরিমাণ খুব বেশি। কোনো শারীরিক সমস্যা থাকলে সেক্ষেত্রে অনেক বুঝে-শুনে এই সব ফল খেতে হয়। তাই মন চাইলেও নিজের শারীরিক চাহিদা বুঝে গ্রীষ্মকালে ডায়েটে ফল রাখুন।

ক্যালোরি বুঝে খান-
যেকোনো ফলই ব্যক্তিবিশেষে ডায়েটের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে খাওয়া উচিত। কারণ সমস্ত রোগ আসলে স্থূলত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত। কোলেস্টেরল বেশি থাকুক বা ডায়াবেটিস কিংবা রক্তচাপ, যেকোনো রোগেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। তাই আম, কাঁঠাল বা লিচুর মতো বেশি ক্যালোরিযুক্ত ফল খেলে খাদ্যতালিকা থেকে খাবারের পরিমাণ অনেকটাই কমাতে হবে। পাশাপাশি মিষ্টি খেতে ইচ্ছে হলে সেক্ষেত্রে বিস্কুট বা কোনো প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার চেয়ে মওসুমি ফল খাওয়া অপেক্ষাকৃত ভালো। এই ধরনের ফলে প্রাকৃতিক ফ্রুকটোজ রয়েছে যা পরিমিত খাওয়াই যায়। সাধারণত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সারাদিনে একটি আম বা বড় কোয়া দু’পিস কাঁঠাল কিংবা চার-পাঁচটা লিচু খাওয়া যেতেই পারে।

আমের ভালো-মন্দ
আমের মধ্যে ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম থাকলেও গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই কম থাকে। সেজন্যই ডায়াবেটিস থাকলে খুব বেশি আম খেতে নিষেধ করা হয়। তবে আমের সঙ্গে কোন খাবারটি খাচ্ছেন তা দেখে নেয়া জরুরি। যেমন আম দিয়ে পায়েস, সন্দেশ ইত্যাদি খাবার দুপুরে ও রাতের খাবারের শেষে প্রতিদিন আম খাওয়ার অভ্যাসও সঠিক নয়। পরিবর্তে সকালের নাস্তায় হাই ফাইবার খাবার যেমন ওটস, ডালিয়া ইত্যাদির সঙ্গে এক পিস আম খেতে পারেন। কিন্তু একসঙ্গে তিন-চারটা আম খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।

কাঁঠালের কার্যকারিতা–
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে রাতের খাবার খেয়ে প্রতিদিন এক-দু কোয়া কাঁঠাল খেতে পারেন। কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে এবং হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকলে, অস্টিওআর্থারাইটিসেও ডায়েটে রাখতে পারেন। আবার কাঁঠাল থাইরয়েড হরমোনের মেটাবলিজমে অর্থাৎ থাইরয়েড হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই থাইরয়েড রোগীরাও সারাদিনে এক-দুই কোয়া কাঁঠাল খেলে উপকার মিলবে।

তালশাঁসে কী আছে?
কিডনির সমস্যায় সোডিয়াম, পটাশিয়াম এবং পানি খাওয়ার বিধিনিষেধ থাকে। সারাদিনে সীমিত পানি খেতে হয় বলে স্বাভাবিকভাবেই রোগীদের গরমে খুবই কষ্ট হয়। সেক্ষেত্রে তালশাঁস পানির খুব ভালো বিকল্প হতে পারে। তালশাঁসে যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম খুবই কম থাকে তেমনি শরীরে পানির চাহিদাও পূরণ হয়। সাধারণত যে কেউ দিনে দু-তিন পিস তালশাঁস খেতে পারেন। এটি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ কিংবা ওজন কমাতেও সাহায্য করে।

লিচু খান শরীর বুঝে-
লিচুর মধ্যে যেহেতু সুগারের পরিমাণ বেশি থাকে তাই ডায়াবেটিসে বুঝে খেতে হবে। মিড-মর্নিংয়ে কিংবা বিকেলে চার-পাঁচটা লিচু খেতে পারেন। লিচুতে পটাশিয়াম বেশি থাকে বলে কিডনির সমস্যা থাকলে খাওয়া উচিত নয়। তবে এতে ভিটামিন বি১২ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। থাইরয়েড রোগীদেরও খুব বুঝে লিচু খেতে হবে।


তথ্যসূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply