ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে এক নারীর সাথে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুরের আপত্তিকর ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় নৈতিক স্খলনের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এর জেরে উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে তার অপসারণ চেয়ে ঝাড়ু মিছিল করেছেন নারীরা। এর নেতৃত্ব দেন সরাইল উপজেলা শ্রমিক লীগের সদস্য সচিক শেখ আবুল কালাম।
শুক্রবার (২৪ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় সরাইল উপজেলার পশ্চিম কুট্টাপাড়া এলাকায় হওয়া এই ঝাড়ু মিছিলে গ্রেফতার দুই যুবকের পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয় নারীরা অংশ নেন। এ সময় মিছিলকারীরা নৈতিক স্খলনের অভিযোগে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে রফিক উদ্দিন ঠাকুরের অপসারণ ও তাকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। এছাড়া অবিলম্বে গ্রেফতার দুই যুবকের মুক্তিও দাবি করেন তারা।
প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে এক বয়স্ক বিধবা নারীর সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুরের একটি আপত্তিকর ভিডিও গত সোমবার ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ৩ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, সরাইল উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিক উদ্দিন ঠাকুর এক নারীর সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত রয়েছেন। চেয়ারম্যানের এই কর্মকাণ্ডে বিব্রত স্থানীয়রা। এই ঘটনায় পুরো উপজেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ফেসবুকে ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে সাইফুল ইসলাম ঠাকুরের দায়ের করা মামলায় বৃহস্পতিবার উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক শেখ আরফান আহমেদ ও কুট্টাপাড়া এলাকার তরিকুল ইসলাম নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
যদিও রফিক উদ্দিন ঠাকুর শুরু থেকে দাবি করেছিলেন, এই ভিডিও সর্ম্পকে তিনি কিছুই জানেন না। তাকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে ভিন্ন একটি ভিডিওতে তার চেহারা জুড়ে দিয়ে এই ভিডিওটি করা হয়েছে। তবে ঘটনার ৩দিন পর বৃহস্পতিবার তিনি দাবি করেন, সেই নারী তার বিবাহিত দ্বিতীয় স্ত্রী। এ সংক্রান্ত একটি কাবিনামাও তিনি সরাইল থানা পুলিশের কাছে উপস্থাপন করেছেন। সেখানে দেখানো হয়, পার্শ্ববর্তী আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা ইউনিয়নে কাজী অফিসে তাদের বিয়ে হয়েছে। যদিও তাদের নিকাহ্ রেজিস্টার কাজী মাওলানা মোবারক হোসেন ২-৩ বছর আগেই মারা গেছেন।
এ ব্যাপারে সরাইল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান তার দ্বিতীয় বিয়ের কাবিননামা আমাদের দিয়েছেন। গ্রেফতার আসামিরা মোবাইলে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে সংরক্ষণ, প্রচার ও সরবরাহ করায় পর্নোগ্রাফি আইনের ৮ ধারা অনুযায়ী তারা অপরাধী। তাদের মোবাইলে এসব আলামত থাকায় তা জব্দ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাদের বিকালে কারাগারে প্রেরণ করে।
এসজেড/
Leave a reply